ETV Bharat / state

CNG Bus Service: সিএনজি বাস পরিষেবায় ক্ষতির মুখে মালিকরা, সরকারি সদিচ্ছায় জোর বিশেষজ্ঞদের

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পাঁচটি সিএনজি বাস পরিষেবা (CNG Bus Service) শুরু হয়েছে উল্টোডাঙা থেকে সাপুরজি পর্যন্ত ৷ কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় বাস মালিকদের লোকসান হচ্ছে ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি সামলাতে সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে ৷

private-bus-owners-initiative-to-run-cng-buses-is-reeling-under-loss
CNG Bus Service: সিএনজি বাস পরিষেবায় ক্ষতির মুখে মালিকরা, সরকারি সদিচ্ছায় জোর বিশেষজ্ঞদের
author img

By

Published : Nov 8, 2022, 6:47 PM IST

Updated : Nov 8, 2022, 10:34 PM IST

কলকাতা, 8 নভেম্বর: চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পাঁচটি কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস বা সিএনজি (CNG) বাস নিয়ে উল্টোডাঙা থেকে সাপুরজি পর্যন্ত শুরু হয়ে পরিষেবা । মালিকপক্ষের আসা ছিল যে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে তাঁদের । লক্ষ্মীলাভও হবে । তবে রাজ্যে সিএনজি-র দুর্বল পরিকাঠামো এবং গ্যাসের চড়া দাম, পরিষেবা বজায় রাখার বিষয় নিয়ে চিন্তায় ফেলেছে তাঁদের । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তাঁদের প্রশ্ন, অন্যান্য শহরে রমরমিয়ে সিএনজি চালিত যানবাহন চললেও পিছিয়ে কেন বাংলা ?

শহরকে দূষণমুক্ত করতে এবং পেট্রল (Petrol) ও ডিজেলের (Diesel) মুখাপেক্ষী না থেকে সিএনজি বাসের (CNG Bus Service) পরিষেবার উপর লাগাতার জোর দিচ্ছে রাজ্য পরিবহণ দফতর । এই বিষয়ে বিভিন্ন ছাড়ও দেওয়া হয়েছে । তাই এই বছরের এপ্রিল মাসে বেসরকারি বাস মালিক পক্ষ পাঁচটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সিএনজি বাস নিয়ে শুরু করে পরিষেবা । রুট হল উল্টোডাঙা-হাডকো মোড়-সিএ আইল্যান্ড-বিকাশ ভবন-করুণাময়ী-এসডিএফ মোড়-টেকনোপলিশ-নিউটাউন-নারকেল বাগান-আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সাপুরজি ।

বেসরকারি বাস সংগঠন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের উদ্যোগে সিএনজি চালিত এসি বাস পথে নামে । পরিষেবা শুরু করার সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে প্রাথমিকভাবে ডিজেলে চালানোর কথা ভাবা হলেও পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাসগুলি সিএনজি-তে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, "এই বছরের এপ্রিল মাসে আমরা যখন এই বাসগুলি পথে নামাই তখন সিএনজি-র দাম ছিল 62 টাকা প্রতি কেজি । বর্তমানে সেই দাম দিয়ে দাঁড়িয়েছে 89.25 টাকায় । শুরুর দিকে বাস চালিয়ে কিছুটা লাভ হলেও এখন একেবারেই লোকসানে চলছে সিএনজি বাস পরিষেবা । পাশাপাশি ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস ভরার সময় যে নির্দিষ্ট প্রেশারে গ্যাস ভরা হয়, তাও কম । তাই যেই টাকা দিচ্ছি সেই পরিমাণে গ্যাস পাচ্ছি না । যদিও সম্প্রতি বর্তমান পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপে কিছুটা বাড়ানো গিয়েছে প্রেশার । তাই সমস্যা কিছুটা হলেও সুরাহা হয়েছে ।"

তিনি আরও বলেন, "সরকার ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় । অন্যদিকে এই বাসগুলো ইএমআই-তে কেনা বলে রাতারাতি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়াও অসম্ভব । সবমিলিয়ে আমরা একটা দোলাচলের মধ্যে রয়েছি । আয়ের থেকে ব্যয় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ।"

সিএনজি বাস পরিষেবায় ক্ষতির মুখে মালিকরা

স্বাভাবিকভাবেই অন্য কোনও বেসরকারি মালিক সংগঠন সিএনজি গাড়ি চালাতে আগ্রহী নয় ৷ আপাতত শহরে দু’টি সিএনজি রিফিল সেন্টার রয়েছে । একটি সাপুরজিতে এবং অন্যটি রাজারহাট অ্যাক্সিস মলের কাছে ।

অটোমোবাইল বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ (Environment Experts) অধ্যাপক প্রবীরকুমার বসু বলেছেন, "শহরের রাস্তায় সিএনজি গাড়ি নামাতে হলে প্রয়োজন উন্নত পরিকাঠামোর । একটি বা দু’টি রিফিলিং সেন্টার দিয়ে রোজের চাহিদা মেটানো অসম্ভব । কারণ, যেকোনও জ্বালানি ব্যবহার করতে হলে তার সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকতে হবে । বর্তমানে যে উপায়ে সিএনজি বাসগুলিতে জ্বালানি ভরা হয়, সেই ব্যবস্থা অবলম্বন করলে সিএনজিতে বাস চালানোর স্বপ্ন কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে । অন্যদিকে ক্যাস্কেডের সাহায্যে গ্যাস নিয়ে আসা হলে পরিবহণ খরচ দিনে দিনে বাড়বে । এটা কোনও স্থায়ী উপায় হতে পারে না । ডানকুনি থেকে কলকাতা পর্যন্ত যে সিএনজি লাইন আসার কথা ছিল, তাও জমি জটিলতায় আটকে রয়েছে ।"

প্রবীরবাবু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘দিল্লি বা মুম্বইয়ের পথে এখন রমরম করে চলছে সিএনজি চালিত যানবাহন । দিল্লিতে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সিএনজি চালু করা হলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে রিফিল স্টেশন ছিল না । কিন্তু দিল্লি সরকার সেই সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলেছিল । তাই সরকারের শুধু পরিকল্পনা থাকলেই হবে না ৷ তা প্রণয়ন করার সদিচ্ছাও থাকতে হবে ।"

প্রসঙ্গত, বর্তমানে দুর্গাপুর, ডানকুনি ও রানিগঞ্জ থেকে ক্যাস্ক্যাডে করে সিএনজি গ্যাস আনা হয় । তারপর পাম্পে গ্যাস ভরা হয় । এই ব্যবস্থাটি যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনই যাতায়াতের খরচের জন্য সিএনজির দাম অনেক বেশি হয়ে যায় ।

আরও পড়ুন: সরকারি উদ্যোগে শহরে বসল সিএনজি পাম্পিং স্টেশন

কলকাতা, 8 নভেম্বর: চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পাঁচটি কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস বা সিএনজি (CNG) বাস নিয়ে উল্টোডাঙা থেকে সাপুরজি পর্যন্ত শুরু হয়ে পরিষেবা । মালিকপক্ষের আসা ছিল যে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে তাঁদের । লক্ষ্মীলাভও হবে । তবে রাজ্যে সিএনজি-র দুর্বল পরিকাঠামো এবং গ্যাসের চড়া দাম, পরিষেবা বজায় রাখার বিষয় নিয়ে চিন্তায় ফেলেছে তাঁদের । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তাঁদের প্রশ্ন, অন্যান্য শহরে রমরমিয়ে সিএনজি চালিত যানবাহন চললেও পিছিয়ে কেন বাংলা ?

শহরকে দূষণমুক্ত করতে এবং পেট্রল (Petrol) ও ডিজেলের (Diesel) মুখাপেক্ষী না থেকে সিএনজি বাসের (CNG Bus Service) পরিষেবার উপর লাগাতার জোর দিচ্ছে রাজ্য পরিবহণ দফতর । এই বিষয়ে বিভিন্ন ছাড়ও দেওয়া হয়েছে । তাই এই বছরের এপ্রিল মাসে বেসরকারি বাস মালিক পক্ষ পাঁচটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সিএনজি বাস নিয়ে শুরু করে পরিষেবা । রুট হল উল্টোডাঙা-হাডকো মোড়-সিএ আইল্যান্ড-বিকাশ ভবন-করুণাময়ী-এসডিএফ মোড়-টেকনোপলিশ-নিউটাউন-নারকেল বাগান-আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সাপুরজি ।

বেসরকারি বাস সংগঠন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের উদ্যোগে সিএনজি চালিত এসি বাস পথে নামে । পরিষেবা শুরু করার সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে প্রাথমিকভাবে ডিজেলে চালানোর কথা ভাবা হলেও পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাসগুলি সিএনজি-তে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, "এই বছরের এপ্রিল মাসে আমরা যখন এই বাসগুলি পথে নামাই তখন সিএনজি-র দাম ছিল 62 টাকা প্রতি কেজি । বর্তমানে সেই দাম দিয়ে দাঁড়িয়েছে 89.25 টাকায় । শুরুর দিকে বাস চালিয়ে কিছুটা লাভ হলেও এখন একেবারেই লোকসানে চলছে সিএনজি বাস পরিষেবা । পাশাপাশি ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস ভরার সময় যে নির্দিষ্ট প্রেশারে গ্যাস ভরা হয়, তাও কম । তাই যেই টাকা দিচ্ছি সেই পরিমাণে গ্যাস পাচ্ছি না । যদিও সম্প্রতি বর্তমান পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপে কিছুটা বাড়ানো গিয়েছে প্রেশার । তাই সমস্যা কিছুটা হলেও সুরাহা হয়েছে ।"

তিনি আরও বলেন, "সরকার ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় । অন্যদিকে এই বাসগুলো ইএমআই-তে কেনা বলে রাতারাতি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়াও অসম্ভব । সবমিলিয়ে আমরা একটা দোলাচলের মধ্যে রয়েছি । আয়ের থেকে ব্যয় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ।"

সিএনজি বাস পরিষেবায় ক্ষতির মুখে মালিকরা

স্বাভাবিকভাবেই অন্য কোনও বেসরকারি মালিক সংগঠন সিএনজি গাড়ি চালাতে আগ্রহী নয় ৷ আপাতত শহরে দু’টি সিএনজি রিফিল সেন্টার রয়েছে । একটি সাপুরজিতে এবং অন্যটি রাজারহাট অ্যাক্সিস মলের কাছে ।

অটোমোবাইল বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ (Environment Experts) অধ্যাপক প্রবীরকুমার বসু বলেছেন, "শহরের রাস্তায় সিএনজি গাড়ি নামাতে হলে প্রয়োজন উন্নত পরিকাঠামোর । একটি বা দু’টি রিফিলিং সেন্টার দিয়ে রোজের চাহিদা মেটানো অসম্ভব । কারণ, যেকোনও জ্বালানি ব্যবহার করতে হলে তার সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকতে হবে । বর্তমানে যে উপায়ে সিএনজি বাসগুলিতে জ্বালানি ভরা হয়, সেই ব্যবস্থা অবলম্বন করলে সিএনজিতে বাস চালানোর স্বপ্ন কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে । অন্যদিকে ক্যাস্কেডের সাহায্যে গ্যাস নিয়ে আসা হলে পরিবহণ খরচ দিনে দিনে বাড়বে । এটা কোনও স্থায়ী উপায় হতে পারে না । ডানকুনি থেকে কলকাতা পর্যন্ত যে সিএনজি লাইন আসার কথা ছিল, তাও জমি জটিলতায় আটকে রয়েছে ।"

প্রবীরবাবু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘দিল্লি বা মুম্বইয়ের পথে এখন রমরম করে চলছে সিএনজি চালিত যানবাহন । দিল্লিতে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সিএনজি চালু করা হলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে রিফিল স্টেশন ছিল না । কিন্তু দিল্লি সরকার সেই সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলেছিল । তাই সরকারের শুধু পরিকল্পনা থাকলেই হবে না ৷ তা প্রণয়ন করার সদিচ্ছাও থাকতে হবে ।"

প্রসঙ্গত, বর্তমানে দুর্গাপুর, ডানকুনি ও রানিগঞ্জ থেকে ক্যাস্ক্যাডে করে সিএনজি গ্যাস আনা হয় । তারপর পাম্পে গ্যাস ভরা হয় । এই ব্যবস্থাটি যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনই যাতায়াতের খরচের জন্য সিএনজির দাম অনেক বেশি হয়ে যায় ।

আরও পড়ুন: সরকারি উদ্যোগে শহরে বসল সিএনজি পাম্পিং স্টেশন

Last Updated : Nov 8, 2022, 10:34 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.