কলকাতা, 11 এপ্রিল: জাতীয় শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে সরব প্রদেশ কংগ্রেস । প্রদেশ কংগ্রেসের অধ্যাপক, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের তরফে এই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ তোলা হচ্ছে । মঙ্গলবার রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য অভিযোগ করে বলেন, "দেশের শিশুদের শুধু গেরুয়া রং চেনানোর পরিকল্পনা হচ্ছে । কেন তাঁরা সবুজ, বা সাদা কিংবা অন্য কোনও রং চিনবে না ? নিন্দা করছি ।"
এনসিইআরটি-এর দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যে ইতিহাস বই থেকে মোঘল সাম্রাজ্যের অধ্যায় বাদ দেওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন প্রদীপবাবু । তিনি বলেন, "বই থেকে মুঘল ইতিহাস কেন বাদ দেওয়া হয়েছে ? এইভাবে কি ইসলাম বা মুসলিমদের ইতিহাস বাদ দেওয়া যাবে ? আমরা তো হিন্দু রাজ-রাজরা, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, কণিষ্কদের ইতিহাস বাদ দেওয়ার কথা বলছি না । কিন্তু, এইভাবে ইতিহাসের অঙ্গছেদ মানছি না । এইভাবে ইতিহাসের গতিধারা বদলানো যায় না । বদলানো যাবে না । জলের স্রোত যেমন বেশি দিন আটকে রাখা যায় না । তেমনি, ইতিহাসের গতিধারাকেও বদলানো যাবে না ।"
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আক্রমণ করে প্রদীপ ভট্টাচার্য আরও জানান, পড়ুয়ারদের মনের গতিধারাকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না । সরকারি বন্ধন থেকে শিক্ষার মুক্তি হওয়া উচিত । পড়ুয়াদের স্বাধীনভাবে নিজেদের চিন্তার বিকাশ ঘটা দরকার। তাই শুধু এনসিইআরটি নয়, সার্বিকভাবে বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, খ্যাতনামা বিশ্লেষক, অধ্যাপক শিক্ষকদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে নয়া শিক্ষানীতি রূপায়ণ করা প্রয়োজন ।
আরও পড়ুন: 'রাজভবনের জনসংযোগ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হলে আপত্তি করব !'
এদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও সুর চড়ান প্রদীপ ভট্টাচার্য । তিনি বলেন, "ভেবেছিলাম জাতীয় শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ধরনায় বসবেন । কিন্তু, না । তারাও কার্যত একই পথে চলছে । বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে 300 টাকায় গেস্ট লেকচারার নিয়োগ । প্রেসিডেন্সিতে 1500 টাকায় । কী হচ্ছে এসব। উচ্চমেধার মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে-মেয়েদের নিম্ন মানের বেতন দিয়ে অপমান করার অধিকার নেই সরকারের।" অন্যদিকে, এদিন ইস্যুতে কলেজ স্ট্রিটে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই । তারা এমজি রোড ক্রসিংয়ের কাছে প্রায় আধাঘন্টা অবরোধ করে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশ পুতুল পোড়ানো হয় ।