কলকাতা, 9 অগস্ট: দক্ষিণ কলকাতার রডন স্কোয়ার। এখানেই রয়েছে এক বিরাট জলাশয়, যাকে ঘিরে রয়েছে বহু গাছ। গাছগাছালি ভরা রডন স্কোয়ারে এক সময় জ্যোতি বসু করতে চেয়েছিলেন বাণিজ্যিক কেন্দ্র। সবুজ বাঁচানোর আন্দোলনে নেমেছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের জেরে সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছিল বাম সরকার। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে বেশ কিছু বছর পরে পরিষ্কার করা হয়েছিল জলাশয়। আগাছা পরিষ্কার হয়েছিল। সেটাই শুরু আর সেটাই শেষ। বর্তমানে সিমেন্টের পাঁচিলে নীল-সাদা তুলির রং পড়লেও ভিতরে বেহাল অবস্থা। সবুজ ক্রমশ হয়েছে ফিকে।
12 হাজার বর্গমিটারজুড়ে ছিল টলটলে জল। আশপাশে গাছ আর সেই সবুজ উধাও করেই একসময় বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল বাম সরকার। পালটা সবুজ বাঁচাও ডাক দিয়ে আন্দোলনে নেমেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। নেতৃত্বে ছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের চাপে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হলেও বছর 30 রডন স্কোয়ারের দিকে ফিরে দেখেনি সরকার। পরবর্তী সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কলকাতা কর্পোরেশন সংস্কার করে রডন স্কোয়ার। এই বিষয়ে বুধবার কলকাতা কর্পোরেশন এক আধিকারিক বলেন, "করোনা কালে রক্ষণাবেক্ষণ বন্ধ ছিল। জলাশয় রক্ষায় কর্পোরেশন সবসময় তৎপর। উদ্যান বিভাগ ও পরিবেশ বিভাগকে বলা হবে রডন স্কোয়ার পরিদর্শন করে যা ব্যবস্থা দরকার তা গ্রহণ করতে।
পুরো রডন স্কোয়ার এখন পরিত্যক্ত বলা চলে। গাছ পরিচর্যার অভাবে সবুজ কমেছে। এখানেই এক সময় শহুরে বনায়ন করা হলেও এখন গাছে অসংখ্য আগাছা ভরতি। সাপ থেকে বেজি, পোকামাকড়, বিছে ভরতি এলাকাজুড়ে। জলে ধীরে ধীরে বাড়ছে কচুরিপানা। এক সময় বলা হয়েছিল পুকুরে মাছ চাষ হবে। তবে সবটাই এখন অতীত। পরিত্যক্ত রডন স্কোয়ারের চেহারায় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পরিবেশ কর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তাঁদের কথায়, সব পক্ষই রাজনীতি করে গেল। আর তার ফাঁদে পড়ে উপেক্ষিত হল পরিবেশ। উপেক্ষিত থেকে গেল এই উদ্যান।
আরও পড়ুন: 30 বছর পর খুলছে রডন স্কোয়ারের দরজা