কলকাতা, 10 অগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ 'আমি সমকামী নই'। মৃত্যুর আগের রাতে হস্টেলের অন্যান্য আবাসিকদের এই কথাই বারংবার বলছিল স্বপ্নদীপ কুণ্ডু । তাই তদন্তকারীদের অনুমান, হস্টেলের মধ্যে কেউ বা কারা তাঁকে সমকামী বলে ব়্যাগিং করত। যদিও ব়্যাগিংয়ের সত্যতা এখনও পুরোপুরি মেলেনি বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা।
বৃহস্পতিবার স্বপ্নদীপের দেহের প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, তাঁর মৃত্যু উঁচু কোনও জায়গা থেকে পড়েই হয়েছে। শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু স্বপ্নদীপ অনেকটা উঁচু জায়গা থেকে পড়ায় তাঁর মস্তিষ্কে চিড় ধরে। পাশাপাশি স্বপ্নদীপের কোমর ভেঙেছে বলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে ৷ এছাড়া বুকের বাঁ-দিকের পাঁজরেও হাড় ভেঙে যাওয়ার ফলে স্বপ্নদীপের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যাদবপুর মেইন হস্টেলের এ2 ব্লকের 68 নম্বর ঘরে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের অতিথি হিসেবে সেখানে থাকছিল স্বপ্নদীপ।
আরও পড়ুন: স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর অ্যান্টি র্যাগিং সেলের নয়া পোস্টার, গঠন হল তদন্ত কমিটি
পুলিশ চারজন ছাত্রের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলে জানতে পেরেছে মৃত্যুর আগের রাত থেকেই স্বপ্নদীপের আচরণে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েছিল। বারবার নিজেকে তিনি সমকামী নন বলে প্রমাণের চেষ্টা করছিল। হস্টেলের আবাসিকরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা বিষয়টি ঘটনার আগের দিন রাতে ডিনকে জানানোর চেষ্টা করলেও রাত হয়ে যাওয়ায় ডিনের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্বপ্নদীপের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পর সেই হস্টেলের তিন আবাসিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে যাদবপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, স্বপ্নদীপ যখন উপর থেকে পড়ছিলেন ঠিক সেই সময় ওই ইউনিভার্সিটির একজন কাশ্মীরি যুবক তাঁর হাত ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু তাঁর হাত ফসকে নীচে পড়ে যায় স্বপ্নদীপ। এদিন সন্ধ্যার পর ওই হস্টেল চত্বরে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং সংস্কৃতির শিকার স্বপ্নদীপ, বলছেন পড়ুয়ারাই