কলকাতা, 8 অগাস্ট: বেহালা চৌরাস্তার পথ দুর্ঘটনায় 7 বছরের সৌরনীল সরকারের মৃত্যুতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে ৷ মামলাকারীর তরফে মূলত চারটি বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে ৷ মূলত, স্কুলগুলির সামনের রাস্তায় ট্রাফিক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এই আবেদন বলা হয়েছে ৷ মামলাটি এ দিন গৃহীত হয়েছে ৷ চলতি সপ্তাহেই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে ৷
জনস্বার্থ মামলার আবেদনে উল্লেখ করা বিষয়গুলি নিয়ে আইনজীবী নীলাদ্রি শেখর ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যের অধিকাংশ স্কুলগুলির সামনে ট্রাফিক আইন মানা হয় না ৷ যার ফলে বেহালার মতো ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে ৷ তাই ট্রাফিক আইন মানা এবং সেই সংক্রান্ত একাধিক বিষয় নিয়ে আমরা আদালতে মামলা দায়ের করার অনুমতি চেয়েছিলাম৷’’
কী বলা হয়েছে আবেদনে ?
1. রাজ্যের যতগুলি স্কুলের সামনের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করে, সেই সব স্কুলের সামনে যেন ট্রাফিক সিগন্যাল ঠিকঠাক মানা হয় ৷ স্কুলে ঢোকা ও বেরনোর সময় যাতে ঠিকঠাক গাইডলাইন মানা হয়, সেই ব্যাপারে নির্দেশ দিক আদালত ৷
2. যে সব বড় রাস্তার পাশে বা কাছাকাছি স্কুল আছে, সেখানে ‘গাড়ি আস্তে চালান’ এই কথাটি তিনটি ভাষায় (বাংলা, হিন্দি এবং ইংরেজি) লেখা থাকতে হবে ৷
3. যদি সম্ভব হয় তাহলে স্কুলগুলির সামনে একটা নির্দিষ্ট সিগন্যালিং ব্যবস্থা করা হোক ৷ জাতীয় সড়ক ছাড়া স্কুল আছে এমন রাস্তায় স্পিড ব্রেকার (বাম্পার) বাধ্যতামূলক করা হোক ৷
4. এমনকি বড় রাস্তার পাশে থাকা স্কুলে ঢোকা ও বেরনোর সময় যাতে ট্রাফিক পুলিশ উপস্থিত থাকে, সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে ৷
আরও পড়ুন: হরিদেবপুর থানা এলাকায় ফের পথ দুর্ঘটনার কবলে নাবালক পড়ুয়া
গত 4 অগস্ট বেহালা চৌরাস্তায় লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের ৷ সিগন্যাল খুলে যাওয়ার পর রাস্তা পার হতে গিয়ে, লরির নিচে চাপা পড়ে যায় সৌরনীল এবং তার বাবা ৷ সৌরনীলের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হলেও, তার বাবা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷
মামলাকারী আইনজীবী মুকুল বিশ্বাস বলেন, "যে সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই সময় এত বড় ট্রাক আসল কোথা থেকে ? মুখ্যমন্ত্রী শোকপ্রকাশ করেছেন ৷ শুধু শোকপ্রকাশ করলেই হবে ? এতদিন নজরদারি নেই কেন ? ট্রাফিক হাত পেতে ঘুষ নেয় সবাই জানে ৷ তবুও নজরদারি নেই ৷ এখন শিশুমৃত্যুর পর স্কুলের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে কী হবে ? আদালতের উপর আমাদের ভরসা আছে ৷ আদালত যাতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়, এই ব্যাপারে যথাযথ গাইডলাইন বানাতে ৷ সেই আর্জি জানিয়েছি আমরা ৷"