কলকাতা, 27 এপ্রিল : রাজ্যের চব্বিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে মানা হয়নি ইউজিসি-র গাইডলাইন ! সেই সব ভিসিদের এই পদ খারিজের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে ৷ মামলা দায়ের করেছে আরএসএস প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন, জাতীয়তাবাদী অধ্যাপক ও গবেষক সংঘ । মামলাকারীদের অভিযোগ, শাসক ঘনিষ্ঠ লোকজনরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত হয়েছেন । প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছে ৷ আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে ৷
নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাজ্যের 24টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে ৷ এই অভিযোগ তুলে গতবছরের ডিসেম্বরে টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ রাজ্যপালের টুইটের ওই তালিকায় 24টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছিল কলকাতা, যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, রবীন্দ্র ভারতী, বর্ধমান, গৌড়বঙ্গ, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ৷ আচার্যের অনুমোদন ছাড়াই ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি ৷ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালন সংক্রান্ত সেই বিষয় নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছেছিল ৷
এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের অস্বচ্ছতার কারণে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বলে ওই পিটিশনে উল্লেখ করা হয় । 2021 সালের অগস্ট মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও রাজ্য সরকার ফের তাঁকে চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় । এই বিষয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আপত্তি জানিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিলেন । কিন্তু তাতে নাকি আমল দেয়নি রাজ্য সরকার ৷
যদিও সেই মামলা নিষ্পত্তি এখনও হয়নি ৷ তার মধ্যে ফের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরও 23টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল ৷ এই বিষয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, "রাজ্যপাল এই বিষয়ে আগেই টুইট করেছিলেন যে ওনার অনুমতি ছাড়াই ভিসিদের নিয়োগ করা হয়েছে ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল অ্যামেন্ডমেন্ড অ্যাক্ট 2012 এবং 2014 অনুযায়ী এই নিয়োগের সময় ইউজিসি গাইডলাইন মেনে চলা হয়নি ৷ ফলে শুধু এই 24টি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ইউজিসির গাইডলাইন না মেনে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে সবগুলিই প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে যাবে ৷"