কলকাতা, 17 জুলাই : উচ্চমাধ্যমিকে 500-র মধ্যে 499 পেয়েছে চারজন । উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ইতিহাসে এই প্রথম এত নম্বর পেয়েছে পরীক্ষার্থীরা ৷ তাদের মধ্যে রয়েছে বাঁকুড়ার বড়জোড়া হাইস্কুলের ছাত্র গৌরব মণ্ডল, বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলের অর্পণ মণ্ডল, হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের ঐক্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতার শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী স্রোতাশ্রী রায় ৷ কোরোনা পরিস্থিতির কারণে, উচ্চমাধ্যমিকের বাকি থাকা পরীক্ষাগুলি নিতে পারেনি শিক্ষা সংসদ ৷ সংসদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, পরীক্ষার্থীর যে বিষয়গুলির লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে তার সর্বোচ্চটিকে বাতিল পরীক্ষার লিখিত অংশের প্রাপ্ত নম্বর হিসেবে গ্রহণ করা হবে । সেই হিসেবেই পরীক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়া হয় ৷ যেমন, স্রোতাশ্রী তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা না দিয়েই 300 নম্বর পেয়েছে ৷ হুগলির ঐক্য বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাই ৷
চলতি বছর কোরোনার জেরে অসম্পূর্ণ থেকে গেছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা । 23, 25 ও 27 মার্চের সবকটি পরীক্ষা প্রথমে স্থগিত ও পরে বাতিল করে দেওয়া হয় । পদার্থবিদ্যা, নিউট্রিশন, এডুকেশন, অ্যাকাউন্টেন্সি, রসায়ন, অর্থনীতি, জার্নালিজ়ম, মাস কমিউনিকেশন, সংস্কৃত, পার্সি, আরবি, ফরাসি, স্ট্যাটিসটিকস, ভূগোল, কস্টিং এবং ট্যাক্সেসন, হোম ম্যানেজমেন্ট এবং ফ্যামিলি রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট- মোট 15টি বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায় ।
বাকি থাকা বিষয়গুলির মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছিল, বাতিল পরীক্ষাগুলির মূল্যায়নের পদ্ধতির ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর যে বিষয়গুলির লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছিল সেগুলিতে সে যে নম্বর পেয়েছে তার সর্বোচ্চটিকে বাতিল পরীক্ষার লিখিত অংশের প্রাপ্ত নম্বর হিসেবে গ্রহণ করা হবে । প্রয়োজনে শতকরা হারে ওই বিষয়ের নম্বর পরিগণিত হতে পারে । এই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর প্রকাশিত উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে একাধিক ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়ল ।
499 পাওয়া স্রোতাশ্রী জানাচ্ছেন, এই ফলাফল তার কাছে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল । সে বলে, "কোনওদিনই ভাবিনি । হ্যাঁ, একটা আশা তো ছিলই যে প্রথম 20-র মধ্যে আসব । কিন্তু, এই রকম নম্বর প্রাপ্তি কোনদিনও ভাবিনি । মেধাতালিকা বের হয়নি । হলে ভালোই লাগত ।" পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষা না হওয়ার প্রসঙ্গে স্রোতাশ্রী বলে, "সত্যি বলতে খুব পড়েছিলাম । বিশেষ করে কেমিস্ট্রিটা । স্কুলের স্যার ম্যামরা খুব হেল্প করেছিলেন । প্রচুর পড়েছিলাম । পরীক্ষা হল না, তাতে একটা খারাপ লাগা তো থাকেই । পরীক্ষা না হলে তো সঠিক মূল্যায়নটা হয় না । আমি 100-র কম পেতেই পারতাম । সেটাই আশা করেছিলাম । কিন্তু, ঠিক আছে । যা হয়েছে, হয়েছে ।"
বর্তমানে JEE মেন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্রোতাশ্রী । সায়েন্স স্ট্রিমের ছাত্রী স্রোতাশ্রী রায় গণিতে 100, পদার্থবিদ্যায় 100, স্ট্যাটিসটিক্সে 100, রসায়নে 100 ও ইংরেজিতে 99 পেয়েছেন । যদিও, চলতি বছর পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও স্ট্যাটিসটিক্স বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি । তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা না দিয়েই 100-য় 100 পেয়েছে সে ।