কলকাতা, 10 মে : চিকিৎসার জন্য চেন্নাই গেছেন । লকডাউন শুরু হওয়ায় দীর্ঘ দেড় মাস সেখানেই আটকে রয়েছেন তাঁরা । বর্তমানে রাজ্য সরকার ভিনরাজ্যে আটকে পড়া প্রত্যেককে ফেরাতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে । যে কারণে কিছুটা আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন আটকে পড়া রোগী ও পরিবারের সদস্যরা । তাঁরা ভেবেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এন্ট্রি পাস লিংকের মাধ্যমে খুব সহজেই ফিরতে পারবেন নিজেদের রাজ্যে । কিন্তু তা হল না । গতকাল দিনভর এন্ট্রি পাসে অ্যাপ্লাই করেও ব্যর্থ হলেন তাঁরা । হল না সামান্য কোনও সুবিধা । আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার ID কার্ড সহ সমস্ত তথ্য দিয়ে এন্ট্রি পাসের ফর্ম ফিলআপ করা সত্ত্বেও বার বারই আসছে "ইনভ্যালিড " শব্দটি।
চেন্নাইয়ে চিকিৎসার জন্য এরাজ্যের বসিরহাট থেকে গেছিলেন সুস্মিতা ঘোষ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা । অন্যদিকে, রাজারহাট থেকে গেছিলেন সন্ধ্যা বিশ্বাস ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা । একই রকমভাবে বীরভূমের নলহাটি থেকে পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসার জন্য গেছিলেন মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায় । আসানসোল থেকে সুমন সিং ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা । এই চারটি পরিবারের মোট 11 জন প্রায় দেড় মাস আটকে আছেন চেন্নাইয়ের একটি গেস্ট হাউসে । লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকে রাজ্যে ফেরার জন্য রীতিমতো চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা । সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে যখন শ্রমিক, তীর্থযাত্রী, পড়ুয়া, চিকিৎসার জন্য যাওয়া সহ সমস্ত মানুষকে ভিনরাজ্য থেকে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে , তখন আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন এঁরা ।
ইতিমধ্যেই দফায় দফায় যোগাযোগ করেছেন রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে । এমনকী ফেরার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও । এবার রাজ্য সরকারের এন্ট্রি পাসের মাধ্যমে আবেদন জানিয়ে ফেরার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা । গতকাল দিনভর লাগাতার চেষ্টা করার পরেও রোগী ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনেরা ব্যর্থ হন। তাঁরা জানান, সমস্ত তথ্য দিয়ে বার বার সম্পূর্ণ ফর্ম ফিলআপ করার একদম শেষে দেখাচ্ছে ইনভ্যালিড শব্দ । যার ফলে হতাশ সবাই । আটকে থাকা রোগী মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায় বলেন, " তামিলনাড়ু প্রশাসন ইতিমধ্যেই এক্সিট পাস দিয়েছে । এই পাসের ভ্যালু চারদিন । এই চারদিনের মধ্যে যদি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এন্ট্রি পাস না পাই তাহলে সমস্যায় পড়ে যাব। এমনিতেই খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে । বাড়ি ফিরতে পারলে একটু সুরাহা পেতাম ।" একই রকম কথা বললেন আটকে থাকা আর এক রোগী সন্ধ্যা বিশ্বাস । তিনি বলেন , "এত কষ্টের মধ্যে পড়তে হবে ভাবিনি । এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ চাইছি ।"