কলকাতা, 15 জানুয়ারি : প্রকাশ্যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়েছিল ৷ পৌরভোট পিছনো নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ব্যক্তিগত মতামত দেওয়ায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল দলের অন্দরে ৷ যা নিয়ে কটাক্ষ, পাল্টা কটাক্ষে সরগরম ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দর ৷ এই পরিস্থিতিতে আসরে নামলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ এভাবে প্রকাশ্যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে বিরক্ত মহাসচিব দলের নেতাদের সতর্ক করে বললেন, এই ধরনের বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতিতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে ৷ এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তাও দেন তিনি ৷
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি বারণ করা সত্ত্বেও তাঁরা বিরত হননি । কোনও মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম । কিন্তু শোনেননি । তাই আজ এক বৈঠকে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ঠিক করেছে, যাঁরা এই ধরনের বিবৃতি দেবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷" তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষ বা অপরূপা পোদ্দারের বিরুদ্ধে এখনই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা স্পষ্ট করে জানাননি দলের মহাসচিব ৷ তিনি বলেন, "সেটা দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ঠিক করবে । তবে আমি আবার বলছি, কিছু বলার থাকলে দলের ভিতরে বলুন । এভাবে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন ৷ এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় ৷"
আরও পড়ুন : Municipal Election 2022 : ‘ব্যক্তিগত মত’-এ সিলমোহর, ভোট পিছনোয় হাইকোর্ট ও কমিশনকে ধন্যবাদ জানালেন অভিষেক
কয়েকদিন আগে আলিপুরে এক প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেদিন তিনি নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া ও আগামী দু‘মাস সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি ও মেলা পিছিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন ৷ জানিয়েছিলেন, এটা তাঁর ব্যক্তিগত মত ৷ কিন্তু অভিষেক তো শুধু ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ নন ৷ তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ তাই তাঁর এই মন্তব্যে আলোড়ন পড়ে যায় ৷ প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি অভিষেকের বক্তব্যই তৃণমূল কংগ্রেসের অভিমত ? দলের নেতাদের অনেকেই এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ৷
তবে উল্টো সুর শোনা যায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় ৷ তিনি দলের মত ও অভিষেকের মত কেন আলাদা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের কড়া সমালোচনা করেন ৷ এভাবে প্রকাশ্যে অভিষেকের সমালোচনা করায় হইচই পড়ে যায় ৷ এর পরই আসরে নামেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ৷ তিনি সওয়াল করেন, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই স্থান অভিষেকের ৷ তাই দলের সৈনিক হিসেবে প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্য শোনা উচিত ৷ কল্যাণ আবার এর পাল্টা দেন ৷ মমতাই তাঁর একমাত্র নেত্রী বলেও দাবি করেছিলেন ৷