কলকাতা, 4 এপ্রিল : বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ওইদিন পর্যন্ত রাজ্যে ছ'জন নয়, কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের । বৃহস্পতিবার আবার চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা নবান্নে পৃথক সাংবাদিক বৈঠক করে ভিন্ন তথ্য পেশ করেন । তারপর থেকেই শুরু হয় জোর বিতর্ক । কোরোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যার বিভ্রান্তি নিয়ে সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেন BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলের নেতারা । গতকাল নাকতলার বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, "বিরোধী নেতারা যা বলছেন তা ঈর্ষা থেকে । এটা রাজনীতি করার সময় নয় ।"
গত কয়েকদিনে রাজ্যে একের পর এক মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে । বেলঘরিয়া, দমদম, হুগলি ও কালিম্পঙে একজন করে এবং হাওড়ায় দু'জন, সবমিলিয়ে এপর্যন্ত রাজ্যে মোট সাতজনের মৃত্যু হয়েছে । সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলির তরফেও নিশ্চিত করা হয়েছে এই খবর । এদিকে, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে মোট কোরোনা পজ়িটিভ কেস 37 । এঁদের মধ্যে 3 জন মারা গেছেন । তিনজনের মধ্যে আবার একজনের নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে । পাশাপাশি সুস্থ হয়েছেন তিনজন । 37 জনের মধ্যে চারটি পরিবার থেকে 17 জন আক্রান্ত হয়েছেন ।"
এরপর বৃহস্পতিবার ফের তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় । প্রায় দু'ঘণ্টার ফারাকে দু'রকম তথ্য সামনে আসে ৷ প্রথমটি কোরোনা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে গঠিত বিশেষজ্ঞ দলের তরফে ৷ আর দ্বিতীয়টি স্বয়ং রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিবের তরফে ৷ প্রথমপক্ষ দাবি করে, এপর্যন্ত কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাতজন ৷ আর মুখ্যসচিবের পরিসংখ্য়ান মান্যতা দেয় ঠিক একদিন আগে অর্থাৎ বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর করা তিনজনের মৃত্যুর দাবিকেই ৷
বিষয়টি সামনে আসতেই সরব হয় বিরোধীরা ৷ অনেকেই দাবি করেন, রাজ্য সরকার নিজেই সম্পূর্ণ পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় । নিজেরাই সঠিক পরিসংখ্যান জানে না ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : বিশেষজ্ঞরা বলছেন 53, মুখ্যসচিবের দাবি 34 ; কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি
এইসব বিষয় নিয়েই গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে সরব হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, "দিলীপবাবু ও তাঁর সমগোত্রীয় নেতারা যা করছেন তা তাঁরা ঈর্ষা থেকে করছেন । মানুষ আগে বাঁচুক । তারপর তো ঠিক হবে কে কংগ্রেস, কে কমিউনিস্ট, কে তৃণমূল, কে BJP । মানুষকে আগে বাঁচতে দিন । মানুষকে বাঁচানোর কাজটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া দ্বিতীয় কেউ করছেন না । সবাই জ্ঞান দিচ্ছেন । এটা অত্যন্ত অন্যায় । রাজনীতি করার সময় এটা নয় । এখন সকলে মিলে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত, মানুষ যেন সুস্থ থাকে । একদিন যেন কোরোনামুক্ত পৃথিবী দেখতে পাই আমরা সকলে । "