কলকাতা, 12 ফেব্রুয়ারি : দীর্ঘদিন ধরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরিদর্শকের ভূমিকায় ফেরার দাবি জানিয়েছিলেন পার্শ্বশিক্ষকরা । এইবার তাঁদের দাবি মানল স্কুল শিক্ষা দপ্তর । এই বছরই মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাঁদের পরিদর্শকের ভূমিকায় থাকবেন তাঁরা । ইতিমধ্যে সেই নির্দেশিকা জারি করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । দীর্ঘ 12 বছর পর আবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করতে চলেছেন পার্শ্বশিক্ষকরা ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে আজ জারি করা এই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয় । রাজ্যের প্রত্যেক জেলা পরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । নির্দেশিকায় লেখা হয়, "ভেন্যু সুপারভাইজারদের নির্দেশ দেওয়া হয় 2020 সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পার্শ্বশিক্ষকদের নিযুক্ত করতে হবে । দায়িত্বপ্রাপ্ত সব শিক্ষক ও পার্শ্বশিক্ষকদের 2020-র মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দেওয়া নির্দেশগুলি মানতে হবে ।"
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল পার্শ্বশিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি রমিউল ইসলাম শেখ বলেন, "12 বছর এই নিয়োগ বন্ধ । 2007 সালে একটি বাম শিক্ষক সংগঠনের পরামর্শে তৎকালীন সরকার পার্শ্বশিক্ষকদের ইনভিজ়িলেশনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় । আমরা এই বিষয়ে আগে বহুবার কথা বলেছি । কিন্তু, আমরা জানতাম না তৎকালীন সরকার নিয়ম করে তা করেছিল । জুলাই মাসে বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন আমরা বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনি । তিনি সেই মুহূর্তেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে এই বিষয়ে নজর দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন । গতকাল আমি সেই বিষয়ে পর্ষদের দপ্তরে কথা বলতে গিয়েছিলাম । সেখানে স্কুল শিক্ষা দপ্তর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও তাঁদের আইনের লোকজন সবাই মিলে বসে গতকাল এই নির্দেশটা প্রস্তুত করে শিক্ষামন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠান । পার্থ চট্টোপাধ্যায় আজ অনুমোদন দিলেন । আজ নির্দেশ জারি করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ।"
দীর্ঘ 12 বছর পর মাধ্যমিকে পরিদর্শকের ভূমিকায় ফেরা নিয়ে রমিউল ইসলাম শেখ আরও বলেন, "যে স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার হত সেখানকার পার্শ্বশিক্ষকদের হেনস্থা হতে হত । লজ্জাকরভাবে তাঁদের সই করে পিছনের দরজা দিয়ে বের করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হত । কোনও কোনও জায়গায় তাঁদের জল, খাতা নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হত । কোথাও কোথাও অভিভাবকদের কাছে তীর্যক মন্তব্য শুনতে হত যে, সারা বছর পড়িয়েও পরীক্ষা নিতে পারেন না । পার্শ্বশিক্ষকদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ে অসহ্য মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হত । ঠিক ঠাক বেতন পাই না কিন্তু এত বড় অসন্মানে আমরা মানসিকভাবে কষ্ট পেতাম । সেটা আজ আমাদের সরকার, শিক্ষামন্ত্রী বুঝতে পেরে 2007 সালের বাধা তুলে দিয়ে আমাদের সন্মান ফিরিয়ে দিলেন । আমরা ধন্য ।"