বউবাজার, 1 জুলাই: মেট্রো বিপর্যয় কিছুতেই যেন পিছু ছাড়ছে না বউবাজার এলাকার । শুক্রবার ফের দুর্গা পিতুরি লেনের একটি বাড়ির সামনের কিছু অংশ খসে পড়ে । দেওয়ালের বাইরে ফাটল হয়েছে সুস্পষ্ট । তাই দেখেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে । আর কতদিন তাদের এই হয়রানির মধ্যে থাকতে হবে, প্রশ্ন তুলেছেন তারা । পাশাপাশি মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অভিযোগ জানিয়েছেন । দু'পক্ষই আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখার ।
শুক্রবার বেলার দিকে দুর্গা পিতুরি লেনে ঢুকতেই সামনের 6/সি ঠিকানার পুরনো বহুতলটির দোতলা ও তিনতলার জানলা এবং বারান্দার কার্নিশের একাংশ আচমকা ভেঙে পড়ে । পাশাপাশি দেওয়ালে একটি ফাটলও নজরে এসেছে । যদিও ঘটনাটি ঘটার সময় ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে । তাই আহত বা প্রাণহানির মত কোনরকম ঘটনা ঘটেনি সেখানে । এই ঘটনার পরেই স্থানীয়রা খবর দেন বাড়ির মালিককে । তিনি আশংকায় ও উদ্বেগে ছুটে আসেন বাড়ির কাছে । ঘটনাস্থলে এসে দেখেন ছড়িয়ে থাকা চাঙড় সরিয়ে ফেলার কাজ চলছে । মেট্রো কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ।
আরও পড়ুন: পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে হোটেলের ঘরে নাভিশ্বাস দুর্গা পিতুরির বাসিন্দাদের
বাড়ির মালিক চণ্ডি দত্ত বলেন, "এই বাড়িতে জন্ম ৷ কিন্তু মেট্রোর কাজের জন্য সেই জন্মভিটে ছাড়া হতে হয়েছে আমাদের বেশ কয়েক বছর হল ৷ তারপরেও দিনের পর দিন কাটছে কোন সুরাহা নেই । উলটে চোখের সামনে দেখছি কীভাবে নিজের সেই জন্মভিটে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে । আজকের ঘটনা বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে এবং মেট্রো রেলকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি । তারা আশ্বাস দিয়েছে বিষয়টি দেখবেন বলে ।"
এই ঘটনায় অবশ্য বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ জন্মেছে । কারণ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে মাটিতে মিশে গিয়েছে । কিছু বাড়ির অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় তারা ঘরছাড়া । কেউ কেউ আবার পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছে ৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাড়িতে থাকছেন বাসিন্দারা । বাড়ির ভিতরে ওঠার সিঁড়িতে দেওয়ালের কার্নিশে লোহার বিম লাগানো । কখন কী হয় সেই আশংকাতেই দিন কাটাচ্ছেন তারা ।
আরও পড়ুন: ফিরল 2019-এর বিভীষিকা, মেট্রোর কাজে বউবাজারের বহু বাড়িতে ফাটল
স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে'র ওয়ার্ডে বসার অফিসের পাশের বাড়ি এমন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে তিনিও । কাউন্সিলর বলেন, "বহুদিন ধরে বলে আসছি ৷ আপনারাও জানেন । কবে যে এর সুরাহা হবে বুঝতে পারছি না ৷ মেট্রো কাজের শুরুতে নিরাপত্তা বেষ্টনী আঁটোসাঁটো রেখেছিল ৷ তা যত দিন যাচ্ছে তত হালকা হচ্ছে । তাই বিপদ আরও বাড়ছে । রাত হলে কাজের জেরে বিকট শব্দ কম্পোনে বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে থাকেন । ঘুমোতে পারেন না । মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তারা বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন ।"