বেহালা, 4 অগস্ট: বেহালার অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে 2 ঘণ্টার বেশি সময় বড়িশা হাইস্কুলের ভিতরেই আটকে থাকল প্রাথমিকের পড়ুয়ারা ৷ পরে পুলিশের মদতে পড়ুয়াদের স্কুলের পিছন গেট দিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বের করা হয় ৷ সঙ্গে ছিলেন বেহালা মহিলা থানার আধিকারিক এবং পুলিশ কর্মীরা ৷ আজ সাত সকালে বেহালা চৌরাস্তায় বড়িশা প্রাথমিকের পড়ুয়া এক শিশু বাবার সঙ্গে রাস্তা পার হওয়ার সময় বেপরোয়া লরি তাঁদের ধাক্কা দেয় ৷ ঘটনাস্থলেই শিশুর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷
এই ঘটনায় রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বেহারা চৌরাস্তা এলাকা ও বড়িশা স্কুল চত্বর ৷ অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে অভিভাবকরা তাঁদের বাচ্চাদের স্কুলের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ৷ তাঁদের ক্লাসরুমে বসিয়ে রাখেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷ আর সেই সময় বাইরে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয় ৷ অভিযোগ স্থানীয় এবং অভিভাবকদের একাংশ দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখায় ৷ পুলিশের বাইক, প্রিজন ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ৷ এর পর সরকারি ও বেসরকারি বাসেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ৷
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অভিভাবকদের সকলকে স্কুলের ভিতরে পুলিশি প্রহরায় ঢুকতে দেওয়া হয় ৷ এর পর ধীরে ধীরে পড়ুয়াদের তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের পিছনের গেট দিয়ে বাইরে বের করা হয় ৷ বেশ কয়েকজন পড়ুয়া টিয়ার সেলের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ৷ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, স্কুলের ভিতরেই তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷
আরও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাবা ও ছেলের, মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ বেহালায়
এই পুরো ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেছেন অভিভাবক এবং স্থানীয়দের একাংশ ৷ তাঁদের অভিযোগ সকালবেলা স্কুলের সময় চৌরাস্তার মতো ব্যস্ত রাস্তায় কোনও পুলিশ থাকে না ৷ আর যে একজন ট্রাফিক পুলিশ ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে ৷ ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক সার্জেন ঘাতক গাড়িটিকে আটকানোর কোনও চেষ্টাই করেননি ৷ স্থানীয়রা ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে মালবাহী গাড়ির থেকে টাকা তোলার অভিযোগ করেছেন ৷
এই ঘটনায় সকালে 10টা নাগাদ কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল ঘটনাস্থলে যান ৷ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সেখানে উপস্থিত পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ অন্যদিকে, বেহালা চৌরাস্তা থেকে একের পর এক ট্রাফিক সিগন্যাল পেরিয়ে ঘাতক লরিটি হাওড়ায় চলে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷ সেটিকে সাঁতরাগাছি ব্রিজ থেকে আটক করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: সাঁতরাগাছিতে আটক বেহালার ঘাতক লরি, প্রশ্ন কর্তব্যরত পুলিশের ভূমিকায়
এখানেই আইপিএস মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, কীভাবে ওই ঘাতক লরি তারাতলা ট্রাফিক, মোমিনপুর একবালপুর ট্রাফিক সিগন্যাল পেরিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে উঠল ? এমনকি দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরিয়ে সেটি সাঁতরাগাছি ব্রিজ পর্যন্ত চলে গেল ৷ কিন্তু, লরি বা লরির চালককে কলকাতা পুলিশের কোনও ট্রাফিক গার্ডই আটকালো না কেন ? ফলে ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সত্যিই কি নিজের দায়িত্ব পালন করেননি ? তিনি যদি ঘাতক লরির তথ্য ওয়্যারলেসে দিতেন, তাহলে কলকাতা ছেড়ে লরিটির বেরিয়ে যাওয়ার কখনই সম্ভব ছিল না ৷