কলকাতা, 16 ফেব্রুয়ারি: ডিএ ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ বিরোধীরদের । অভিযোগ, বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন । এমনকী ডিএ দিতে না-পারলে সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই বলতেও শোনা গিয়েছিল তাঁকে । অথচ, বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শাসক তৃণমূল সরকার 35 শতাংশ প্রাপ্য ডিএ সরকারি কর্মচারীদের দিচ্ছে না । যে কারণে গত 20 দিন ধরে ধর্মতলার শহিদ মিনারে অবস্থান বিক্ষোভে বসে আছেন সরকারি কর্মচারীরা । আগামী 20 ও 21 ফেব্রুয়ারি টানা 48 ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন । হক আদায় না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা (Opposition slam Mamata Banerjee on DA Issue) ।
ইতিহাস কী বলছে ?
রাজ্যে তখন বামফ্রন্ট সরকার। 2011 ভোটের আগে শিক্ষকদের ধর্না মঞ্চে গিয়ে সিপিআইএমের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন ও ডিএ'র তফাৎ তুলে ধরে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন । 2011 সালের 22 সেপ্টেম্বরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, যে সরকার সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য ডিএ দিতে পারে না, সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই ।"
তার আগে 2009 সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্শ্ব শিক্ষকরা ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন । সেই ধর্না মঞ্চে গিয়ে শিক্ষক, পুলিশ-সহ সমস্ত কর্মচারীদের অভয় দিয়ে মমতা বলেছিলেন, "এই সরকার আর কয়েকটা মাস । সহ্য করুন । কষ্ট করে আন্দোলন চালিয়ে যান । কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না । এই সরকার দাবি পূরণ না-করতে পারলে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এসে আপনাদের দাবি পূরণ করবে ।" অথচ, রাজ্যে গত 11 বছর ধরে ক্ষমতায় আছে তৃণমূল কংগ্রেস । যার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আর এই ইস্যুতেই সিপিআইএম, কংগ্রেস মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে ।
আরও পড়ুন: প্রাইভেট মেম্বার বিল এনেই ইউনিফর্ম সিভিল কোড আইনে পরিণত করতে চায় কেন্দ্র, অভিযোগ মমতার
সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "বাজেট পড়তে পড়তে হঠাৎ পেছন থেকে মুখমন্ত্রী একটা চিরকুট দিলেন । ঘোষণা হল 3% ডিএ দেওয়া হবে । হাস্যকর বাজেট । রাজ্যে কর্মচারীদের ডিএ'র বঞ্চনা 35 শতাংশ । কেন্দ্রের 4% বাড়ছে জেনে রাজ্য ঘোষণা করল 3% । তাহলে ফারাক কমল কোথায় ? বরং বেড়ে হল 36 শতাংশ । তাও এটা বাজেট বইতে নেই । কায়দা বাজির ঘোষণা । বাংলার মানুষ আর কত নাটক দেখবে ?"
এআইসিসি সদস্য শুভঙ্কর সরকার বলেন, "বাজেটে সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসেব থাকে । সামঞ্জস্যতা থাকে । তৃণমূলের সরকারের বাজেটে তার কোনও সামঞ্জস্যতা নেই । তাই, আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেছিলেন, আর এখন কী করছেন, তা তো মিলবে না, এটাই স্বাভাবিক ।"