কলকাতা, 4 মার্চ: কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারিতে সরব বিরোধীরা (Opposition Reaction on Koustav Bagchi Arrest) ৷ ঘটনার সরাসরি নিন্দা করেছেন সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতারা ৷ অন্যদিকে, বিজেপি নেতৃত্ব এই গ্রেফতারির সমালোচনা করলেও গ্রেফতারির নেপথ্য়ে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন তাঁদের কেউ কেউ !
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি পুলিশ প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে বেআইনি এবং স্বৈরাচারী বলে তোপ দাগেন ৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান যাঁকে যা খুশি বলতে পারেন ! তাতে কোনও সমস্য়া নেই ! কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে ৷ তাছাড়া, কৌস্তভের বিরুদ্ধে পুলিশ 'মুখ্যমন্ত্রীর শ্লীলতাহানি'র অভিযোগ এনেছে বলেও দাবি করা হচ্ছে ৷ এই ধারা ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন সুজন ৷ তাঁর মতে, এক্ষেত্রে কৌস্তভের বিরুদ্ধে অন্যায় করা হয়েছে ৷ শ্লীলতাহানির ধারার এমন 'অপপ্রয়োগে' প্রকৃত জায়গায় এই ধারার ব্যবহার লঘু হয়ে যাবে ! সুজনের অভিযোগ, সাধারণ মহিলারা যখন সত্যি সত্যিই শ্লীলতাহানির শিকার হন, তখন পুলিশ দোষীদের পাকড়াও করতে কোনও পদক্ষেপ করে না ! অথচ, এখানে কৌস্তভের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দেগে দেওয়া হল ! সুজন মনে করেন, সাগরদিঘি উপনির্বাচনে পরাজিত হয়েই একজন কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে !
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন সিপিএমের আর এক নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও ৷ ঘটনার প্রতিবাদে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তিনি ৷ এমনকী, কৌস্তভের হয়ে আদালতে মামলাও লড়ছেন ৷ বিকাশরঞ্জন তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, "খবর পেলাম, আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ ৷ শুনলাম রাত তিনটে নাগাদ তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় ৷ মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্যের জন্যই এই গ্রেফতারি ৷ আবারও প্রমাণ হল, মোদি-যোগী-মমতা এক বাগানের ফুল ! অবিলম্বে কৌস্তভের মুক্তি দাবি করছি ৷"
আরও পড়ুন: 'মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ভয় পেয়েছেন', দাবি ধৃত কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর
সমালোচনার একই সুর শোনা গিয়েছে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের গলাতেও ৷ তিনিও মনে করেন, এই ঘটনা আদতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল ! সাগরদিঘি উপনির্বাচনে হেরেই এমন আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে রাজ্য়ের সরকার ! প্রদীপ জানিয়েছেন, এই বিষয়ে দলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা শীর্ষ নেতৃত্ব স্থির করবে ৷
তবে, ঘটনার সমালোচনার করেও ভিন্ন মত পোষণ করেছেন বিজেপির জাতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি মনে করেন, রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসাবে বিজেপির 'ওজন কমাতেই নন-ইস্যুকে ইস্যু করা হচ্ছে' ! এই মুহূর্তে বাম-কংগ্রেসের তুলনায় বিজেপি রাজ্যে অনেক বেশি শক্তিশালী ৷ এ নিয়ে শাসকদল চিন্তিত বলে মনে করেন দিলীপ ৷ তাই আইএসএফ, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টকে আন্দোলনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে ! যাতে মানুষের নজর বিজেপির থেকে তাদের দিকে ঘুরে যায় ! এই কারণেই আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে এতদিন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে মনে করেন দিলীপ ! তাঁর দাবি, একই কারণে কৌস্তভকেও গ্রেফতার করা হয়েছে !