কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর: বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য ইস্যু নিয়ে বাড়ছে রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে বিতর্ক। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। এমনকি রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে রাজনীতিতে ফের তোলপাড় শুরু হয়েছে। বাম-কংগ্রেস রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল, উভয়ের কড়া সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে বিজেপি আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই আক্রমণ করেছে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "আজ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন মাইনে বন্ধ করে দেবেন। আর একজন বলেছিলেন আমরা মাইনে দিই, তিনি এখন জেলে আছেন। নবান্ন আর রাজভবনের সংঘাতে নাভিশ্বাস উঠছে উচ্চশিক্ষার। শিক্ষাকে লাঠে তুলেছেন। শিক্ষক দিবসে আমরা অভিভাবকদের বলব, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদি) প্রেরণায় আগামী প্রজন্ম যাতে মূর্খ না হন, সেই শিক্ষা দিতে হবে।"
সেলিম আরও বলেন, "রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী মিলে কতটা নাটক করছেন জানি না। মূল ইস্যু থেকে সরে গিয়ে করছেন।মুখ্যমন্ত্রী এমন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি করেছেন, যে তাঁর মন্ত্রী (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) জেলে আছেন।" সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "শিক্ষার সর্বনাশের শক্তি এরা!! এক নির্দেশে রাজ্যপালই উপাচার্য। পরের নির্দেশে রাজ্যকে সরিয়ে রেখে উপাচার্যের একক ক্ষমতা। তার পরেই আবার নতুন 16 অস্থায়ী উপাচার্য। পাগলা দাশুরাও হার মেনে যায়!! রাজ্যপাল আর মুখ্যমন্ত্রীর লোক দেখানো লড়াইয়ে শিক্ষা-সংহার না করে এরা ছাড়বে না দেখছি।’’
রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল দু’জনেই সমান অপরাধী। দু’জনের এই ধরনের কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ও তাঁদের জীবন সর্বনাশ করার অধিকার দু’জনের কারও নেই। না রাজভবনের আছে, না রাজ্যের শিক্ষা দফতরের আছে। অবিলম্বে এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ হওয়া উচিত। অভিভাবকদেরও এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।"
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রাজ্যপালের কথা শুনে চললে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব, হুঁশিয়ারি মমতার
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বশাসিত সংস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় তার মতো চলবে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করবেন কেন? বিশ্বভারতীর আচার্য প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তিনিও হস্তক্ষেপ করেন না। বামপন্থীরা সঠিক ব্যবস্থা করতে পারেনি বলেই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল।’’ ধরনার বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষ করে বলেন, ওঁর নামই তো 'ধর্না দিদি'।