কলকাতা, 16 এপ্রিল: রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী । মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন তাঁরা । কিন্তু দু’দিন পার হয়ে গেলেও কোনও উত্তর না আসায় আজ ফের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ।
কোরোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ঘোষিত 21 দিনের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হয়েছে । দ্বিতীয় দফায় আপাতত 3 মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে । নানা অসুবিধা সত্ত্বেও যেভাবে মানুষ এই লকডাউনকে মেনে নিয়েছে তাঁকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা । আবদুল মান্নান বলেন, "হঠাৎ করে এবং অপরিকল্পিত এই লকডাউন দরিদ্র মানুষের জীবনে চরম বিপর্যয় ডেকে এনেছে । এই সময় সরকারের অপদার্থতা যেভাবে সমাজ জীবনে গভীর ক্ষত তৈরি করছে তা নিতান্তই দুর্ভাগ্যজনক । নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় দফার লকডাউন ঘোষণায় মানুষের সুরাহা তো দূরের কথা বরং দুশ্চিন্তা এবং হতাশা বাড়িয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর গালভরা ভাষণের সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । প্রতিশ্রুতি মতো মানুষের খাদ্যের সংস্থান হচ্ছে না । প্রতিটি মানুষের জন্য চাল, আটা, ডাল, আলু ইত্যাদি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে । না হলে বাংলায় চরম বিপর্যয় আসতে চলেছে ।"
কোরোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে নাকি তথ্য গোপন করছে রাজ্য সরকার । এই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা । এই নিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, "চিকিৎসার নামে প্রহসন চলছে । সারা দেশের মধ্যে কোরোনা টেস্ট কিট সবচেয়ে কম এ রাজ্যে । চিকিৎসা, রোগের প্রকার, মৃত্যুর কারণ নির্ণয় প্রতিটি ক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে । তথ্য গোপন করতে গিয়ে রোগটাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে । চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী এমনকী হাসপাতালে রোগীরা এতে বিপদে পড়ছেন ।"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সুজন চক্রবর্তীর দাবি, "প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্যের সংস্থান নিশ্চিত করুন । খিদের জ্বালায় মরবে মানুষ তা হবে না। কোরোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য বিকৃতিতে বিপদ ক্রমশ বাড়ছে । এর দায় মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রশাসনের ।"
রাজ্যের বিরোধী দল সহ রাজ্যবাসী সকলেই সরকারের পাশে রয়েছে বলেও জানান তাঁরা ।