কলকাতা, 24 এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে, তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জন সংযোগ যাত্রা শুরু করেছেন ৷ যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ বিরোধীদের। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কটাক্ষ করে বলেছেন পায়ে হেঁটে জন সংযোগের ধক নেই তৃণমূলের ৷ মানুষ হাতে পেলে পিটিয়ে মারবে বলেও তোপ দেগেছেন তিনি ৷ খরচের জোগান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলও ৷
শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি ৷ সোমবার কোচবিহারে পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট ৷ তার আগে জনসংযোগ যাত্রায় অভিষেক ৷ কলকাতা থেকে এদিন হেলিকপ্টারে কোচবিহারে পৌঁছন অভিষেক। হেলিপ্যাড থেকে পায়ে হেঁটে মদনমোদন মন্দিরে পুজোও দেন তিনি। একদিকে যখন অভিষেক ব্যস্ত জনজংযোগে অন্যদিকে তাঁকে সিপিএম ৷ মহম্মদ সেলিম এদিন অভিযোগ করে বলেন, "জনবিচ্ছিন্ন তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা না-করে চুরি, দুর্নীতি ভোলাতে গ্রামে যাচ্ছে । কারণ, পায়ে হেঁটে জন সংযোগের ধক নেই তৃণমূলের। বিজেপির স্টাইলে সাজানো গাড়ির রথযাত্রা ! মানুষ হাতে পেলে পিটিয়ে মারবে। এই কারণেই সরকারি খরচে পুলিশ প্রশাসন সঙ্গে নিয়ে তামাশা করা হচ্ছে। ডিএম, এসডিও-রা সরকারি বাংলো ভাড়া করছে।"
সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম আরও বলেন, "এয়ার কন্ডিশন বাহন নিয়ে এসেছে। নিরাপত্তাহীনতার নাম করে সরকারী ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শহীদ মিনারের মত তামাশা করা হবে। ম্যাপ দেখলে বোঝা যাবে কোথায় কোথায় সভা হবে। চাকরি নিলাম, চন্দন কাঠ পাচার, গরু পাচার হয় যেখানে, সেখানেই এসব করার বন্দোবস্ত হচ্ছে। তাতেও বাংলার মানুষের থেকে স্বস্তি পাবেন না। বাংলার মানুষ লুটেরাদের তাড়িয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়বে।"
সেলিমের আরও বক্তব্য, "রাজ্যে যারা মতুয়া, নমশূদ্র মানুষ তাঁদের অপমান করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের স্বার্থ বিক্রি করেছেন। তৃণমূল, বিজেপি দুটোই ভিলেন। আমরা মনে করি মানুষ এদের ব্যর্থ করবে। ভ্যানিটি ভ্যান ভাঙবে মানুষ। মিথ্যা অহঙ্কার। ঘাম ঝরিয়ে করুক না। লক্ষীছাড়াদের রাজ্য ছাড়া করবেন রাজ্যের মানুষ।"
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ বলে কিছু নেই, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গ: অভিষেক
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল অভিষেকের জনজোয়ার যাত্রাকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি জানান, শুধু দুইটি জেলার তাবুতে খরচ 75 লাখ। এতো টাকা আসছে কোথা থেকে? এরা তো চুরি করেছে। জানে কত-র পিঠে কতগুলো শূন্য থাকলে লাখ, কোটি হয় ? আগে যেমন রাজারা সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে শিকারে যেতেন তেমনি আমাদের যুবরাজও যাচ্ছেন শিকারে। ভোটের শিকারে। বাসের ভিতরে পাঁচতারা হোটেলের মতো ব্যাপার। আমরা বলছি, এসব করে ভোট হবে না। চুরি, দুর্নীতি ভোলানো যাবে না। আমরা মনে করিয়ে দেব।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ কর্মসূচির জন্য এলাহি আয়োজন করা হয়েছে। যেখানেই অভিষেক অধিবেশন করবেন সেখানেই তাবু বানানো হয়েছে ৷ জানা গিয়েছে, একটি তাবুর দাম প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার দুই জেলার তাবু হচ্ছে প্রায় 250-295টি। এক একটি তাবুর দৈনিক ভাড়া 25 হাজার টাকা। দুই জেলা মিলিয়ে তাবুর ভাড়া প্রায় 62 লক্ষ টাকা থেকে 73 লক্ষ টাকা। অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেমের স্ট্রাকচারে তাবু বানানো হয়েছে। বিছানা হয়েছে সবুজ কার্পেটে। তাঁবুতে রয়েছে ষ্টান্ড ফ্যান, সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা ৷