কলকাতা, 27 নভেম্বর: ফের শহরে হিট অ্যান্ড রান । ঘটনাটি ঘটে রবিবার ভোরে ৷ বিলাসবহুল একটি গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে স্কুটির আরোহী এক তরুণের ৷ আহত দুই ৷ এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ ৷ ধৃতরা মাদকাসক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷
2016 সালের 13 জানুয়ারি কলকাতার রেড রোডে একটি বিলাসবহুল গাড়ি ব্যারিকেড ভেঙে চাপা দিয়ে চলে যায় বায়ুসেনার জওয়ান অভিমন্যু গৌরকে । সেই সময় সেখানে ভারতীয় বায়ুসেনা 26 জানুয়ারির জন্য কুচকাওয়াজের মহড়া দিচ্ছিল ৷ প্রায় সাত বছর পর সেই হাড়হিম করা হিট অ্যান্ড রানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল রবিবার ভোরে ৷
মেটিয়াবুরুজ এলাকার ফতেপুর ভিলেজ রোড থেকে একটি স্কুটিতে চড়ে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের দিকে আসছিলেন তিন তরুণ । উলটোদিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি অভিজাত বিলাসবহুল গাড়ি সেই স্কুটিটিকে সরাসরি ধাক্কা মারে । স্কুটিতে বসে থাকা তিনজন আরোহীর মধ্যে একজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে । ঘটনায় মৃত্যু হয় ফাইজাবাদ আনসারি নামে এক পড়ুয়ার । তিনি হরিমোহন ঘোষ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ।
এর সঙ্গে আহত হয়েছেন আতাব ওয়ারিশ ও রেজওয়ান আনসারি নামে দুই ছাত্র । তাঁরা গুরুতর আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই ময়দান থানায় একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে । পাশাপাশি এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের ফ্যাটাল স্কোয়াড ট্রাফিক পুলিশের তদন্তকারীরা । ঘাতক গাড়ি ও ওই স্কুটিটিকে ময়দান থানায় বাজেয়াপ্ত করে রাখা হয়েছে ।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (সদর) সন্তোষ পান্ডে বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের কারও কাছে লাইসেন্স মেলেনি । গাড়িটি একটি সংস্থার নামে রেজিস্টার করা রয়েছে । সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তাদের ইতিমধ্যেই লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ৷’’
এই ঘটনায় ধৃত পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা ফয়জান রাহি ও ইমরান আলি মল্লিক । ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ । ধৃতরা মাদক সেবন করে পালা করে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে লালবাজার । তাঁদের রক্ত এবং মূত্রের নমুনা ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা ।
এদিকে সোমবার সকালে ময়দান থানায় পৌঁছান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা । বিলাসবহুল অভিজাত গাড়ি থেকে বেশ কিছু নমুনা তাঁরা সংগ্রহ করেছেন । মাদকের প্যাকেট তাঁরা ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছেন বলে জানা গিয়েছে । পুলিশ খতিয়ে দেখছে যে ধৃত দু’জন কোথা থেকে মাদক পেয়েছিল ৷ সোমবার ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত ৷
ঘটনাটি কীভাবে ঘটল, তা জানার জন্য ইতিমধ্যেই ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে রেড রোডের যাবতীয় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন কলকাতা পুলিশের ফ্যাটাল স্কোয়াড ট্রাফিক পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
আরও পড়ুন: