ETV Bharat / state

কেটেছে একমাস, আমফানের ক্ষত এখনও বইছে তিলোত্তমা - আমফান

আমফানের পর এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে । অথচ এখনও শহরের বহু এলাকায় পড়ে রয়েছে ভাঙা গাছ । সরানো হয়নি সেগুলি । সরকারের উদাসীনতাকেই দায়ি করছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা ।

aa
শহর
author img

By

Published : Jun 26, 2020, 8:02 PM IST

Updated : Jun 28, 2020, 11:05 PM IST

কলকাতা, 26 জুন : শহরকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান । তারপর কেটে গেছে এক মাসেরও বেশি সময় । কিন্তু এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি কলকাতা । বিভিন্ন জায়গায় অপরিচ্ছন্নতার ছবিটা স্পষ্ট । ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়া গাছগুলি কিছুটা সরানো হলেও অধিকাংশ জায়গায় ফুটপাতে এখনও পড়ে রয়েছে বড় বড় গাছের গুঁড়ি । শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র একই চিত্র । গাছগুলি পড়ে থাকায় রাস্তা আটকে রয়েছে । আর এর ফলে নির্দিষ্ট রুটের গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । কেন এখনও স্বাভাবিক হল না শহরের পরিস্থিতি? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ । বিষয়টি নিয়ে তিতিবিরক্ত রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরাও ।

সদাব্যস্ত মেয়ো রোডে এখনও গাছ পড়ে রয়েছে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে কলেজ স্ট্রিটেও গাছের গুঁড়ি পড়ে রয়েছে । হাজরা চত্বরেও ছবিটা এক । গোদের উপর বিষফোঁড়া জমা জল । ডেঙ্গির স্মৃতি ফিরে আসছে মানুষের মনে । সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা । কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, "সরকার আছে কি না বোঝা যাচ্ছে না । জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের প্রতিনিধিরা ঝড়ের পরে শহর ঘুরে গেছেন । এখনও পর্যন্ত শহরকে স্বাভাবিক করা হয়নি । এতদিন পরেও কেন গাছ সরানো হল না ? সরকারের কী ভাবনা তা বোঝা যাচ্ছে না । সরকারের কোনও বিষয়েই কোনও ধারণা নেই । অর্থনীতি সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই । গাছগুলিকে নিয়ে সদ্ব্যবহার করতে পারত রাজ্য সরকার । নিলামে বিক্রি করে কোষাগারের অর্থ বৃদ্ধি করতে পারত । গাছ কাটার জন্য আলাদা খরচ হত না । বিনা খরচায় গাছগুলি কেটে বিক্রি হয়ে যেত । তার উপর রাজ্য এবং শহরজুড়ে কোরোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে । তারপর ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব । কোরোনা রুখতে সরকার ব্যর্থ । প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে লন্ডভন্ড শহরকে গুছিয়ে তুলতে পারেনি রাজ্য সরকার । মিথ্যা ভাষণ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না রাজ্য সরকার । শ্রমিকরা এই অবস্থায় ফিরে যাচ্ছেন কেরালা, বিহার, কর্নাটকসহ বাইরের রাজ্যগুলিতে । এই রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই । এখনও গাছগুলি পড়ে আছে সর্বত্র । বৃষ্টির জল জমছে রাস্তায় । সরকারের পরিকল্পনাহীনতায় মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ‌। আসলে এখানে একটাই পোস্ট । বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট ।"

aa
ভেঙে পড়ে রয়েছে রেলিং

আশঙ্কার সুর দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে । বলেন, "লন্ডভন্ড শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে । সরকার ভেঙে পড়া গাছগুলি এখনও সরাতে পারেনি । তার উপর জল জমে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে পারে । মানুষ কী করবে ? দিনের পর দিন এইভাবে চলতে থাকলে শহরের পথে আর বেরোনো যাবে তো ?" উত্তরের বাসিন্দা রুমেলা মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, "প্রতিদিন রাস্তায় বেরিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । বিভিন্ন সময় গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাছ পড়ে থাকার জন্য । এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি অনেক জায়গায় । আতঙ্কে দিন কাটছে ।"

এখনও আমফানের ক্ষত বইছে কলকাতা

বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "সরকার তো ধরাছোঁয়ার বাইরে । এক মাস হয়ে গেল শহর এখনও স্বাভাবিক হল না । গ্রামে প্রশাসন নেই । গ্রামবাসীরা এই ঝড়ের পরে গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন । তাঁরাই ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে গ্রামের পথকে চলাচলের যোগ্য করেছেন । শহরে ঠেলাঠেলি চলছে । CESC বলছে সরকার করবে । সরকার বলছে CESC করবে । এখনও রাস্তাতেই সব গাছ পড়ে রয়েছে । ডালপালা, পাতার তলায় জল জমছে । ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে । সরকার সতর্ক হোক । একদিকে কোরোনা সংক্রমণ । অন্যদিকে ডেঙ্গির বিপদ‌ । মানুষের বিপদ বাড়ছে । সরকার তথ্য গোপন করছে । মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার এই বিষয়ে বলা হয়েছে । তিনি নিরুত্তর । প্রয়োজনে তিনি সকলকে ডাকুন । সরকারকে সহযোগিতা করা হবে । আসলে এই রাজ্যের সরকার সম্পূর্ণ অপদার্থ ।"

aa
জল জমে রয়েছে

রাজ্যের পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, " এই কঠিন পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব শহরকে পরিষ্কার করা হয়েছে । লকডাউনের জন্য কর্মীর অভাব রয়েছে । ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে যাওয়া শহরকে গুছিয়ে তুলতে সময় লাগবে। অহেতুক এই বিষয়টি নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না । আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি । ফুটপাথগুলি পরিষ্কারে চেষ্টা করছি । বৃষ্টির জল যাতে না জমে তার জন্য নিকাশি নালাগুলির সংস্কার করে হয়েছে । প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবিলা করা বেশ কঠিন । কলকাতা পৌরনিগমের কর্মীরা শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরানোর কাজ করছে । একটু সময় তো লাগবেই । বিরোধীদের কাছে আবেদন বিরোধিতা না করে শহরকে গুছিয়ে তোলার কাজে হাত লাগান । কলকাতা শহর কেবল শাসক দলের নয়, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের কর্তব্য শহরকে গুছিয়ে তোলা ।"

কলকাতা, 26 জুন : শহরকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান । তারপর কেটে গেছে এক মাসেরও বেশি সময় । কিন্তু এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি কলকাতা । বিভিন্ন জায়গায় অপরিচ্ছন্নতার ছবিটা স্পষ্ট । ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়া গাছগুলি কিছুটা সরানো হলেও অধিকাংশ জায়গায় ফুটপাতে এখনও পড়ে রয়েছে বড় বড় গাছের গুঁড়ি । শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র একই চিত্র । গাছগুলি পড়ে থাকায় রাস্তা আটকে রয়েছে । আর এর ফলে নির্দিষ্ট রুটের গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । কেন এখনও স্বাভাবিক হল না শহরের পরিস্থিতি? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ । বিষয়টি নিয়ে তিতিবিরক্ত রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরাও ।

সদাব্যস্ত মেয়ো রোডে এখনও গাছ পড়ে রয়েছে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে কলেজ স্ট্রিটেও গাছের গুঁড়ি পড়ে রয়েছে । হাজরা চত্বরেও ছবিটা এক । গোদের উপর বিষফোঁড়া জমা জল । ডেঙ্গির স্মৃতি ফিরে আসছে মানুষের মনে । সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা । কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, "সরকার আছে কি না বোঝা যাচ্ছে না । জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের প্রতিনিধিরা ঝড়ের পরে শহর ঘুরে গেছেন । এখনও পর্যন্ত শহরকে স্বাভাবিক করা হয়নি । এতদিন পরেও কেন গাছ সরানো হল না ? সরকারের কী ভাবনা তা বোঝা যাচ্ছে না । সরকারের কোনও বিষয়েই কোনও ধারণা নেই । অর্থনীতি সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই । গাছগুলিকে নিয়ে সদ্ব্যবহার করতে পারত রাজ্য সরকার । নিলামে বিক্রি করে কোষাগারের অর্থ বৃদ্ধি করতে পারত । গাছ কাটার জন্য আলাদা খরচ হত না । বিনা খরচায় গাছগুলি কেটে বিক্রি হয়ে যেত । তার উপর রাজ্য এবং শহরজুড়ে কোরোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে । তারপর ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব । কোরোনা রুখতে সরকার ব্যর্থ । প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে লন্ডভন্ড শহরকে গুছিয়ে তুলতে পারেনি রাজ্য সরকার । মিথ্যা ভাষণ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না রাজ্য সরকার । শ্রমিকরা এই অবস্থায় ফিরে যাচ্ছেন কেরালা, বিহার, কর্নাটকসহ বাইরের রাজ্যগুলিতে । এই রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই । এখনও গাছগুলি পড়ে আছে সর্বত্র । বৃষ্টির জল জমছে রাস্তায় । সরকারের পরিকল্পনাহীনতায় মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ‌। আসলে এখানে একটাই পোস্ট । বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট ।"

aa
ভেঙে পড়ে রয়েছে রেলিং

আশঙ্কার সুর দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে । বলেন, "লন্ডভন্ড শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে । সরকার ভেঙে পড়া গাছগুলি এখনও সরাতে পারেনি । তার উপর জল জমে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে পারে । মানুষ কী করবে ? দিনের পর দিন এইভাবে চলতে থাকলে শহরের পথে আর বেরোনো যাবে তো ?" উত্তরের বাসিন্দা রুমেলা মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, "প্রতিদিন রাস্তায় বেরিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । বিভিন্ন সময় গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাছ পড়ে থাকার জন্য । এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি অনেক জায়গায় । আতঙ্কে দিন কাটছে ।"

এখনও আমফানের ক্ষত বইছে কলকাতা

বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "সরকার তো ধরাছোঁয়ার বাইরে । এক মাস হয়ে গেল শহর এখনও স্বাভাবিক হল না । গ্রামে প্রশাসন নেই । গ্রামবাসীরা এই ঝড়ের পরে গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন । তাঁরাই ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে গ্রামের পথকে চলাচলের যোগ্য করেছেন । শহরে ঠেলাঠেলি চলছে । CESC বলছে সরকার করবে । সরকার বলছে CESC করবে । এখনও রাস্তাতেই সব গাছ পড়ে রয়েছে । ডালপালা, পাতার তলায় জল জমছে । ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে । সরকার সতর্ক হোক । একদিকে কোরোনা সংক্রমণ । অন্যদিকে ডেঙ্গির বিপদ‌ । মানুষের বিপদ বাড়ছে । সরকার তথ্য গোপন করছে । মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার এই বিষয়ে বলা হয়েছে । তিনি নিরুত্তর । প্রয়োজনে তিনি সকলকে ডাকুন । সরকারকে সহযোগিতা করা হবে । আসলে এই রাজ্যের সরকার সম্পূর্ণ অপদার্থ ।"

aa
জল জমে রয়েছে

রাজ্যের পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, " এই কঠিন পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব শহরকে পরিষ্কার করা হয়েছে । লকডাউনের জন্য কর্মীর অভাব রয়েছে । ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে যাওয়া শহরকে গুছিয়ে তুলতে সময় লাগবে। অহেতুক এই বিষয়টি নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না । আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি । ফুটপাথগুলি পরিষ্কারে চেষ্টা করছি । বৃষ্টির জল যাতে না জমে তার জন্য নিকাশি নালাগুলির সংস্কার করে হয়েছে । প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবিলা করা বেশ কঠিন । কলকাতা পৌরনিগমের কর্মীরা শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরানোর কাজ করছে । একটু সময় তো লাগবেই । বিরোধীদের কাছে আবেদন বিরোধিতা না করে শহরকে গুছিয়ে তোলার কাজে হাত লাগান । কলকাতা শহর কেবল শাসক দলের নয়, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের কর্তব্য শহরকে গুছিয়ে তোলা ।"

Last Updated : Jun 28, 2020, 11:05 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.