কলকাতা, 13 ডিসেম্বর: পৈতৃক ভিটেতে স্থানীয় ক্লাবের ছেলেদের প্রোমোটিং করতে বাধা দেওয়ায় মারধর খেতে হয়েছিল ৷ অবশেষে বাড়ি থেকেই নিখোঁজ হয়ে গেলেন বারুইপুরের এক বৃদ্ধ । পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ছেলে ।বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের রিপোর্ট তলব করেছে ।
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, বারুইপুরের বাসিন্দা গোপাল সর্দার জন্মসূত্রেই পৈতৃক ভিটেতে থাকেন । স্নায়ুরোগ-সহ নানা শারীরিক রোগে আক্রান্ত তিনি । বাড়ির পাশেই সালেপুর যুববৃন্দ সংঘ নামে একটি ক্লাব রয়েছে । ক্লাবের সদস্যরা গোপাল সর্দারের বসতবাটির জায়গায় প্রোমোটিং করতে উৎসাহী বলে তাঁকে জানান । কিন্তু তিনি তাতে রাজি না থাকায় জোর করে তাঁর পৈতৃক ভিটে দখল করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ । আরও অভিযোগ, প্রোমোটিঙে বাধা দিলে গোপাল সর্দার ও তাঁর পুত্র বাবাই সর্দারকে বেধড়ক মারধরও করা হয় ।
এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন গোপাল সর্দারের পুত্র বাবাই সর্দার । তাঁর অভিযোগ, আদালতে মামলা করার পর তাঁদের পরিবারের উপর আরও চোটপাট শুরু হয় । নানারকম ভয় দেখানো ও হুমকি দেওয়া চলে । এবং তাঁদের মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করা হয় ।
চলতি বছরের 29 অক্টোবর হঠাৎ করে গোপাল সর্দার নিখোঁজ হয়ে যান । 30 অক্টোবর বাবাই সর্দার স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিন নভেম্বর ফের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি ৷ তাঁর বাবাকে হয় অপহরণ করা হয়েছে অথবা নয়তো মেরে ফেলা হয়েছে বলে আশংকা করছেন তিনি । বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও 17 নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি ।
মামলাটি বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে উঠলে আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরী জানান, 29 অক্টোবর থেকে ওই ব্যক্তি নিখোঁজ । তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত । ফলে তাঁকে বেশিদিন আটকে রাখলেও তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যাবেন । তাঁকে কোথাও লুকিয়ে রাখা হয়েছে বা মেরে ফেলা হয়েছে ।
রাজ্য জানায়, মামলা দায়ের হওয়ার পর ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে কিডন্যাপের মামলা শুরু করে তদন্ত চলছে । কিছুদিন সময় দিলে দ্রুত ওই ব্যক্তিকে খুঁড়ে বের করা সম্ভব হবে । ডিভিশন বেঞ্চ আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই ঘটনায় পুলিশ কী তদন্ত করেছে সমস্ত কেস ডায়েরি-সহ অন্যান্য নথি আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছে ।
আরও পড়ুন: