কলকাতা, 1 মার্চ: বাস সংগঠনের আশংকাই সত্যি হল ৷ বুধবার থেকে রাস্তায় কমতে শুরু করেছে বেসরকারি বাস (number of private buses decreasing) । পয়লা মার্চ থেকে বেসরকারি বাসে ভেহিক্যালস লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) বসানো না থাকলে সেই বাসের সিএফ বা সার্টিফিকেট ওফ ফিটনেস এবং পারমিট নবীকরণ করা যাবে না । এমনটাই অভিযোগ তুলেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যন্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন । তাই প্রতিদিন বেসরকারি বাসের সংখ্যা রাস্তা থেকে কমতে থাকবে সেই বিষয় আশংকা প্রকাশ করে সংগঠন ।
পথ দুর্ঘটনা এড়াতে ও যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সমস্ত বাণিজ্যিক চার চাকার গাড়িতে ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকার ডিভাইস ও ইমারজেন্সি প্যানিক বাটন লাগাবার নির্দেশিকা প্রকাশ করেছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর । গত 14 নভেম্বর পরিবহণ দফতরর এই নির্দেশিকাটি জারি করে । প্রথম নির্দেশিকা অনুসারে গত 31 ডিসেম্বরের মধ্যেই ভিএলটিএস বসাবার সময়সীমা দেওয়া হয় ৷ তবে বাজারে যন্ত্র অমিল থাকায় আবারও সময়সীমা বাড়িয়ে 31 মার্চ পর্যন্ত করা হয় । গোড়া থেকেই এই যন্ত্র নয়, বরং গোড়ায় গলদ দেখেছেন বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি ।
বাজারে যন্ত্রের অভাব, যে 12টি সংস্থার থেকে কিনতে হবে এই যন্ত্র তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ না থাকা, যন্ত্রের দামের অত্যাধিক দাম, যন্ত্রের দামের ফারাক এবং বেসরকারি মালিকদের উপর বাড়তি আর্থিক বোঝা ছাপানো ৷ এরকম একাধিক অভিযোগ তুলেছে মালিক পক্ষ । তবে এবার গোদের উপর যেন বিষ ফোঁড়া । কারণ বাসগুলির সিএফ এবং পারমিট নবীকরণ করতে হলে বুধবার থেকেই থাকতে হবে ট্রিকেইং ব্যবস্থা । যদিও এই বিষয় এখনও কোনও লিখিত নির্দেশিকা জারি করেনি পরিবহণ দফতর । এমনটাই অভিযোগ তুলেছে বাস মালিক সংগঠন ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বপন ঘোষ বলেন, "মঙ্গলবার সিএফ করাতে গিয়ে আমাদের দু-একটি বাস ফিরে এসেছে । কারণ পরিবহণ দফতর থেকে সেইসব বাস মালিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবার থেকে বাসে থাকতে জনে ভিএলটিএস ও প্যানিক বাটন না-হলে সার্টিফিকেট ওফ ফিটনেস এবং পারমিট নবীকরণ করা হবে না।"
তিনি জানান, এতদিন পর্যন্ত যেই বাসগুলো সিএফ করতে গেলে তাদের একটা সাদা পাতায় মুচলেখা দিতে হত ৷ এই বলে, সিএফ পাশ হয়ে গেলেও আগামী 31 মার্চের মধ্যেই তাঁরা ভিএলটিএস বসিয়ে নেবে গাড়িতে । গত কয়েকদিন ধরে সেই মুচলেখাও আর চাওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । যদিও এর কোনও লিখিতভাবে নির্দেশিকা এখনও জারি করা হয়নি । আর এমনটা যদি শুরু হয় তাহলে ধীরে ধীরে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ব্যপকভাবে হ্রাস পাবে রাস্তায় বলে স্বপন ঘোষ জানান । এর ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে সাধারণ যাত্রীদের । পাশাপাশি এখন রাজ্যে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও চলছে । তাই সাধারণ মানুষের অসুবিধার জন্য তারা দায়ী থাকবেন না বলেও তিনি জানান ।
পাশাপাশি মালিক পক্ষ প্রশ্ন তুলেছে, শুধু বেসরকারি বাসকে কেন বলা হচ্ছে ৷ অটো, বাইক, টেক্সি বা সরকারি বাসের ক্ষেত্রে এই ট্রেকিং ব্যবস্থা শুরু করার কথা বলা হচ্ছে না কেন? তারা জানিয়েছে, দামের ক্ষেত্রেও তারতম্য রয়েছে । এক একটি সংস্থার এক এক রকম দাম । এছাড়াও সংস্থাগুলির এখনও কোনও সার্ভিস সেন্টার নেই ।
প্রসঙ্গত, ভিএলটিএস নিয়ে সম্প্রতি পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে 12টি প্যানেলভুক্ত সংস্থা এবং মালিক পক্ষের বৈঠক হয় । ওই বৈঠকে মালিক পক্ষ তাঁদের এই দাবিগুলি জানায় ৷ সংস্থাকে যন্ত্রের দাম, কবে থেকে তা মিলবে বাজারে এবং সার্ভিস সেন্টারই বা কোথায় হবে এই সব তথ্যগুলি দ্রুত স্পষ্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন: 122 বছরে সবথেকে উষ্ণ ফেব্রুয়ারি দেখল দেশ, মার্চেই তাপপ্রবাহের আশঙ্কা