কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি: আবারও অসাধ্য সাধন করল কলকাতার সরকারি হাসপাতাল (Government Hospital)। জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচল বত্রিশের তরুণীর। সোমবার কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে হয়েছে এই বিরল অস্ত্রোপচার । প্রায় সাত ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের জেরে প্রাণ ফিরে পেলেন ওই তরুণী । পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই রোগীর নাম পূজা গিরি । দীর্ঘ তিনমাস ধরে অসহ্য পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তিনি । খাওয়ার পর সেই যন্ত্রণা আরও বেড়ে যেত ।
জানুয়ারি মাসে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন পূজা ৷ সে সময় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় ৷ তাতে দেখে যায় তাঁর অগ্ন্যাশয়ের একটি টিউমার রয়েছে। এনআরএস হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক উৎপল দে'র তত্ত্বাবধানে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসক জানান, অগ্ন্যাশয়ের তিনটি অংশ। এই তরুণীর দেহে টিউমারটি ছিল বডি ও টেল জুড়ে । লিভারে রক্ত আসে পোর্টাল ভেনের মাধ্যমে । মানবদেহে এই ভেনের গুরুত্ব অপরিসীম। তরুণীর ক্ষেত্রে টিউমারটি সেটা ধরে নিয়েছিল । ফলে এটা কেটে বাদ দিলে তাঁর পক্ষে বাঁচা আর সম্ভব হত না ।
অনেক সময় এই ধরনের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে টেবিলেই মৃত্যু হয় রোগীর। তাই এই ভেন কেটে বাদ দিতে হয় খুব সাবধানে। সেভাবেই অস্ত্রোপচার হয় ওই তরুণীর। তবে যেহেতু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই টিউমারটি কেটে বাদ দিতে হয়, ফলে বাদ পড়ে যায় পোর্টাল ভেনের একাংশ। সেই জায়গাতেই লাগানো হয় আর্টিফিশিয়াল ভেন। রোগীর দেহের অন্য অংশ থেকে ভেন নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয় অগ্ন্যাশয়ে। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, পৃথিবীতে এই ধরনের অস্ত্রোপচার মোট দশটি হয়েছে । কলকাতায় হয়তো এটাই প্রথম (NRS Hospital successfully performs critical surgery)।
সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক উৎপল দে নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচার হয় । এছাড়াও তাঁর টিমে ছিলেন চিকিৎসক কৃষ্ণা প্রকাশ, চিকিৎসক রিয়াজ আনসারি ও চিকিৎসক বিপাশা সাহা । নতুন জীবন ফিরে পেয়ে খুশি রোগী ও তাঁর পরিবার । পূজা বলেন, " এখন আমি অনেক ভালো আছি । যেভাবে চিকিৎসকরা আমায় সুস্থ করে তুললেন, তা আমি সারাজীবন মনে রাখব । ওনারা আমার জন্য অনেক করেছেন ।"
আরও পড়ুন: জটিল অস্ত্রোপচার সাফল্য পেল কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল, প্রাণ বাঁচল 23 বছরের তরুণীর