কলকাতা, 4 অক্টোবর: ধাপে ধাপে আরও উন্নত হচ্ছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের পরিষেবা ৷ যাত্রী স্বাচ্ছন্দ দিতে এবার হাওড়া-পটনা বন্দে ভারতে যুক্ত করা হল একাধিক উন্নতমানের পরিকাঠামো ৷ মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের অন্তর্গত আরও ন'টি রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়েছে । গত মাসের 24 তারিখেই শুরু হয়েছে ট্রেনগুলির বাণিজ্যিক পরিষেবা ৷ যার মধ্যে রাজ্য পেয়েছে দুটি ট্রেন । একটি পূর্ব রেল শাখার হাওড়া-পটনা বন্দে ভারত এবং অপরটি হল দক্ষিণ পূর্ব রেল শাখার হাওড়া-রাঁচি বন্দেভারত ।
একাধিক নয়া সরঞ্জাম হাওড়া-পটনা বন্দেভারতে
তবে পরিষেবা শুরু হয়ে গেলেও যাত্রী স্বাচ্ছন্দের কথা মাথায় রেখেই ধাপে ধাপে আরও উন্নত করা হচ্ছে এই ট্রেনগুলিকে । তাই সম্প্রতি আরও উন্নত কিছু ব্যবস্থা এবং সরঞ্জাম যুক্ত করা হয়েছে হাওড়া-পটনা বন্দে ভারতে । তেমনটাই জানিয়েছেন পূর্ব রেল শাখার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র । নিঃসন্দেহে রেল পরিবহণের ক্ষেত্রে বন্দে ভারত সেমি হাই স্পিড ট্রেন হিসেবে বিশ্ব দরবারে এক নতুন উদাহরণ কায়েম করেছে । তাই ভারতের নিজেস্ব বুলেট ট্রেনকে বিশ্বমানের করে তুলতে চায় রেল মন্ত্রক । তাই প্রতিনিয়ত এই ট্রেন 18 সেট নিয়ে চলছে বিভিন্ন ভাঙাগড়া । তারই অংশ হিসাবে এবার হাওড়া-পটনা বন্দে ভারতে যুক্ত করা হয়েছে আরও বেশ কিছু উন্নত পরিকাঠামো ।
আসনে না হয়েছে পরিবর্তন
সূচনার দিন কোচগুলিতে নির্দিষ্ট কিছু সাজসজ্জা ছিল ৷ সেগুলিতে ক্ষেত্রে আরও কিছু সংযোজন এবং পরিবর্তন আনা হয়েছে । ট্রেনগুলি চেয়ারকার ৷ তাই আসনগুলিকে আরও বেশি আরামদায়ক করা হয়েছে । এই ক্ষেত্রে আরগোনোমিক আসন পাবে যাত্রীরা । অর্থাৎ মেরুদণ্ডের আকারের সঙ্গে যাতে নিজে থেকেই খাপ খেয়ে যায় আসনগুলিকে সেই মতো সেগুলি তৈরি করা হয়েছে । পা রাখার জায়গা করা হয়েছে আরও বড় আখারে ৷ এতে লম্বা যাত্রীদের পা ছড়িয়ে বসতে কোনও অসুবিধা হবে না । আসনে যে কুশন সাটানো রয়েছে সেগুলির আরও বেশ মলায়ম এবং নরম করা হয়েছে । ঘুমনোর সময় যাতে যাত্রীরা তাঁদের আসন কিছুটা পেছন দিকে হেলিয়ে শুতে পারে সেই মতো সিটগুলি আরও বাড়ানো হয়েছে । অর্থাৎ আগের চেয়ে যাত্রীরা আরাম করার জন্য পেছন দিকে আরও বেশি হেলিয়ে দিতে পারবেন তাঁদের আসন ।
আরও পড়ুন: 24 সেপ্টেম্বর পথচলা শুরু হচ্ছে পটনা-হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের
চোখের আরামের দিকে খেয়াল রেখে আলোর ব্যবস্থা
পাশাপাশি একিকিউটিভ ক্লাসে ম্যাগাজিন রাখার ব্যাগের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে । এই ক্লাসে দেওয়ালের দিকে মুখ করে রয়েছে যেই আসনগুলি সেগুলির জন্য ম্যাগাজিন ব্যাগের ব্যবস্থা করা হয়েছে । একিকিউটিভ ক্লাসের আসনের রং কোচের রঙের সঙ্গে মানানসই করেই হয়েছে এই পরিবর্তন । শৌচালয় হাত ও মুখ ধোঁয়ার জন্য যেই ওয়াশ বেসিনগুলি রয়েছে সেগুলির গভীরতা আরও বাড়ানো হয়েছে । এর ফলে যাত্রীর জামা কাপড়ে বা মেঝের উপর জল পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে । পরিবহণের ক্ষেত্রে আলো কেমন এবং তা ঠিক কোথায় বসানো হয়েছে তার উপর অনেকটাই যাত্রীদের চোখের আরাম নির্ভর করে । তাই কোনও কিছু পড়ার সময় বা ঘুমনোর সময় যাতে তাঁদের কোনও সমস্যা না হয় সেই দিকে নজর রেখেই আলোর ব্যবস্থাকে আরও পরিবর্তন করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: ট্রেনের কামরা নাকি বিলাসবহুল হোটেল ! বন্দে ভারত স্লিপারের নকশায় বিস্মিত দেশবাসী
শৌচালয়ে হবে না জলের অপচয়
ঠিক একইভাবে শৌচালয় হ্যান্ডেলগুলিকে বদল করা হয়েছে ৷ এ বার আরও অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে হ্যান্ডেলগুলি ৷ এই হ্যান্ডেলগুলি ব্যবহার করা নিরাপদও । শৌচালয়ে জলের ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এমন প্রযুক্তি এবং পরিষেবা ব্যবহার করা হয়েছে যা জল অপচয় রুখতে সহায়তা করবে এবং শৌচালয়ে যে জল ব্যবহার করা হয়েছে তা পরিবেশবান্ধবও । শুধু ট্রেনকে যাত্রীবান্ধব করে তুলতেই নয়, বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীদের যাতে ট্রেনে উঠতে বা নামতে কোনও সমস্যা না হয় সেই দিকে নজর দেওয়া হয়েছে । উইল চেয়ার রাখার স্থানগুলিকে আলাদা করে চিহ্নিত করা রয়েছে । প্রসঙ্গত, গত 24 সেপ্টেম্বর মোট ন'টি বন্দে ভারত সেমি হাইস্পিড ট্রেনের 18টি সেটের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । যার মধ্যে রাজ্যের ছিল হাওড়া-পটনা এবং হাওড়া-রাঁচি এক্সপ্রেস ট্রেন ।