কলকাতা, 19 এপ্রিল: পবিত্র ঈদের দিনও পরীক্ষা ৷ যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন জামায়াতে ইসলামি হিন্দ সংগঠন ৷ পাশাপাশি এই ঘটনায় কলকাতা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ৷ পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারের কাছে তিনদিনের ছুটির আবেদন করা হলেও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ ইসলামিক সংগঠনটির নেতা মওলানা আব্দুর রফিকের ৷ তাঁর দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে সরকার এবং প্রশাসনের একটা অংশ সম্প্রদায়িক মনোভাব রেখে কাজ করাছে ৷
রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরীক্ষার নির্ঘণ্ট ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। গত 11 এপ্রিল এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এমবিবিএস মৌখিক এবং প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার নির্ঘণ্টও প্রকাশিত হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজগুলির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী 23 এপ্রিল রবিবার সম্ভাব্য ঈদ-উল-ফিতরে পরীক্ষার দিন ধার্য হয়েছে ৷ যা নিয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেন ক্ষুব্ধ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
অন্যদিকে, পরীক্ষার নির্ঘণ্টকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ৷ তিনি বলেন, "আগামী 22 এপ্রিল ঈদ। তবে চান্দ্র মাসের হিসাবে রমজান মাস 30 দিনে হলে এবারের ঈদ আগামী 23 এপ্রিলও উদযাপিত হতে পারে। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে রাজ্য সরকারের কাছে ঈদ উপলক্ষ্যে তিনদিনের ছুটির আবেদন করা হলেও সাড়া মেলেনি। এর আগে আমি নিজেও একাধিকবার তিনদিন ছুটির পাশাপাশি ঈদের আগের দিন বা পরের দিন কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা না-রাখার আবেদন করেছি। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবারও কলকাতা মেডিকেল কলেজে আগামী 23 এপ্রিল পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।"
সম্ভাব্য ঈদের দিন হিসাবে 22 এবং 23 এপ্রিলও মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা কলকাতার পাশাপাশি ভিন্ন স্থানে যান ৷ সেক্ষেত্রে রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে গিয়ে পড়ুয়াদের পরীক্ষা দিতে হলে পরবের সময় ব্যাপক সমস্যা ভোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির উদাসীনতা নিয়েও ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি ৷ সেইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, বারবার রাজ্য সরকার এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে ঈদের কথা মনে করিয়ে দিতে হবে কেন ?
আরও পড়ুন: শাহকে মমতার ফোন নিয়ে শুভেন্দুর দাবি মিথ্যা, টুইট কুণালের
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামি হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের নেতা মওলানা আব্দুর রফিক বলেন, "সরকারের অধীনস্থ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কীভাবে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ করতে পারে ? মুসলিম সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসবের দিন পরীক্ষার নির্ঘণ্ট প্রকাশ খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও সংখ্যালঘু দফতর খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ৷ ফলে তিনি এর দায় এড়াতে পারেন না।" পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, সরকার ও প্রশাসনের একটা অংশ সাম্প্রদায়িক মনোভাব থেকে যে এই ধরনের অপকর্ম করছেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর মতে, ইতিপূর্বে অনেকবার এই ধরনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হয়েছে, প্রতিবাদের মুখে কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাহারও করেছে। তিনি বলেন, "প্রতিবারই এই ধরনের অপকর্ম করা হবে আর মুসলিম সম্প্রদায় এর প্রতিবাদ করবে, তারপর নির্ঘণ্ট পরিবর্তন হবে এটা চলতে পারে না।"