কলকাতা, 11 সেপ্টেম্বর: সকাল থেকেই দক্ষিণ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে দফায় দফায় চলছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বৈঠক । রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শহরে এসেছেন দুজন সিনিয়র ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার । পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা এ দিন লোকসভার জন্য জেলাশাসকদের উদ্দেশে কড়া দাওয়াই দিয়েছেন ৷
আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সবক'টি রাজ্যে । বাংলায় লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে এসেছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দল । গতকালই শহরে এসেছেন সিনিয়র ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার ধর্মেন্দ্র শর্মা ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার নীতেশ ব্যাস । আজ সকাল থেকেই চলছে বৈঠক ।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ড. আরিজ আফতাব জানান, "দু'জন সিনিয়র ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার যাঁরা কলকাতায় এসেছেন, তাঁরা সমস্ত জেলাশাসক এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে নিয়ে এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করছেন । মূলত আগামী লোকসভা নির্বাচন ও স্পেশাল সামারি রিভিশন নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে ।"
এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে তাতে জানা যাচ্ছে যে, ডেপুটি কমিশনাররা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও ভাবেই আইনশৃঙ্খলার গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না । কমিশনের আইন মেনেই হবে সব কাজ । জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পরেই রাজ্যে চলে আসবে কেন্দ্রীয় বাহিনী । প্রতিটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে ।
পাশাপাশি কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সন্ত্রাসের ছবি উঠে এসেছে, তেমনটা লোকসভার ক্ষেত্রে কোনওভাবেই মেনে নেবে না জাতীয় নির্বাচন কমিশন । তাই সেই দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে । প্রত্যেক জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে, তাঁদের গতিবিধির উপর এখন থেকেই নজর রাখতে হবে । যাতে নির্বাচনের আগে তাঁরা কোনও ভাবেই কোনও সমস্যা বা আতঙ্কের সৃষ্টি করতে না পারে । এককথায় সাধারণ মানুষ যেন ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই আতঙ্কগ্রস্ত বা ভীত না হয়ে পড়েন, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু, রবিবার রাজ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দল
আগামী 1 নভেম্বর খসড়া তালিকা প্রকাশ পাবে । আগামী 5 জানুয়ারি 2014 সালের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে । আধিকারিকরা নির্দেশ দিয়েছেন যে, চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দল বা কোনও ব্যক্তির যেন কোনও অভিযোগ না থাকে । অর্থাৎ ভোটার তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে হবে কমিশনকে ।
ভোটার তালিকাকে 100 শতাংশ নির্ভুল করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে । কারণ বিরোধীরা বারে বারে ভোটার তালিকায় ত্রুটি এবং একাধিক কারচুপি নিয়ে নালিশ জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে । অর্থাৎ তালিকায় যেন কোনও মৃত ব্যক্তির নাম না থেকে যায় । নতুন নাম সংযোজনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির পরিচয় পত্র ভালোভাবে খতিয়ে দেখে তারপরেই নাম নথিভুক্ত করতে হবে ।
কমিশনের নিয়ম মেনে বুথ তৈরির জায়গা নির্বাচন করতে হবে । বুথের বাইরে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে । পাশাপাশি শৌচাগার, বসার জায়গা ও মাথার উপর ছাউনির ব্যবস্থা করতে হবে । কোথাও যদি বুথ নিয়ে কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিতে হবে ।