কলকাতা 10 জুন : আজ ফের কলকাতা হাইকোর্টে শুরু হল নারদ মামলার (Narada Scam case) শুনানি । নারদ মামলা রাজ্য থেকে সরানোর জন্য সিবিআই যে আবেদন জানিয়েছিল তার উপর শুনানি চলছে ।
আজ অভিযুক্তদের তরফে বলছেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা । তিনি বলেন,"বিচারপতিরা সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করার শপথ নেন । তারা মানুষের ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হন না । যদি সলিসিটর জেনেরালের বক্তব্য স্বীকার করে নেওয়া হয়, তাহলে আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ব। তাহলে মনে হবে মাননীয় বিচারপতিরা যে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন সেটা একটা কাগজ ছাড়া কিছু নয় । "
এর প্রত্যুত্তরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন ,"এই বক্তব্যের অর্থ কি আপনি কি বলতে চাইছেন যে বিচারপতিরা তাদের গ্রহণ করার শপথ মেনে চলেন না ?"
তখন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা বলেন, "আমি বলতে চাইছি যে নিম্ন আদালতের বিচারকরা শপথের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই নির্ভয় রায় দান করেছেন । যে শপথের মর্যাদা রক্ষার কথা আমরা সব সময় বলি বিশেষ বিচারক কি সেটা রক্ষা করবেন না ?" বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন বলেন ,"বিচারপতিরা নিজেদের শপথের শর্ত মেনেই কাজ করেন ।" আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথ্রা আবার বলেন," সিবিআই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের কোনও কারণ জানায়নি ।"আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আরও বলেন," সিবিআই বারবার বলছে যে নিম্ন আদালতে বিচারক প্রভাবিত হয়েছেন ৷ তাঁকে ঘেরাও করা হয়েছিল । একজন বিচারক প্রতিদিন 40 থেকে 50 টা করে মামলা শোনেন । এটা কি বিশ্বাসযোগ্য যে একজন বিচারক লোকজনের দ্বারা প্রভাবিত হবেন ?"
তখন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন," বিচারকরা সাধারণ মানুষ ৷ তারা কম্পিউটার নয় । অনেক সময় পরিস্থিতি এমন হয় যে, তাদের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নাই হতে পারে ৷"
সিদ্ধার্থ লুথ্রার বক্তব্য, "সিবিআই 17 মে বেলা 2টো 35 মিনিটে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মেইল পাঠিয়েছিল ৷ যেখানে বলা ছিল 'মব অ্যাটাক অ্যাট নিজাম প্যালেস।' যে ই-মেইল পাঠানো হয়েছিল সেটা রাজ্যপাল এবং অন্যান্য আইনজীবীদেরও পাঠানো উচিত ছিল । আদালতকে এর জন্য শেষ পর্যন্ত পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বসাতে হল ।"
আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আরও বলেন ,"মামলায় কোনও একপক্ষ জিতবে কোনও এক পক্ষ হারবে । আদালতের নিয়ম অনুযায়ী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যায় । একটা রায় আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে সেটাই মামলা স্থানান্তরের কারণ হতে পারে না ৷ সিবিআই সকাল 8 টা 10 মিনিটে গ্রেফতার করেছে ৷ কিন্তু অ্যারেস্ট মেমোতে 8টা 45 মিনিটে দেখানো হয়েছে । জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার করার আগে অনুমতি নিতে হয় ৷ কিন্তু, এখানে গ্রেফতারের পরে নেওয়া হয়েছে । মদন মিত্রকে কোনওরকম নোটিশ ছাড়াই, ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করা হয় । নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমো দেওয়া হয় ।"
আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা উল্লেখ করেন, সিবিআই দাবি করছে তাদের স্পেশাল আদালতে চার্জশিট দিতে দেওয়া হয়নি । কলকাতা পুলিশ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছিল । সিবিআই নিজেদের দায়িত্বশীল এজেন্সি হিসেবে দাবি করে । আমার মনে হয় এখানে তাদের দায়িত্বশীলতার অভাব রয়েছে । সিবিআই যে হলফনামা দিয়েছে সেখানে সাধারণ মানুষের চাপ, হুমকি ,মবক্রেসি এই শব্দগুলোর কথা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে।"