হাওড়া, 13 জুলাই: আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কড়া নবান্ন ৷ রাজ্যের প্রতি জেলা থেকে পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে রিপোর্ট চাইল প্রশাসন ৷ বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অশান্তি রুখতে পুলিশকে ফ্রি-হ্যান্ড দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার 24 ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাজ্য প্রশাসনের সচিবালয় থেকে হিংসার ঘটনা নিয়ে প্রত্যেক জেলা থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল নবান্ন।
এদিন নবান্নের তরফে প্রত্যেকটি জেলাকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হিংসার সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে করা ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে, অশান্তি রুখতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে জেলা প্রশাসনকে, সেই নির্দেশও পাঠানো হয়েছে নবান্নের তরফে। আদালতের নির্দেশে জেলায় এই মুহূর্তে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ তাদের যাতে জেলা পুলিশ-প্রশাসন সাহায্য করে, তাও নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। তবে যাতে এসবের মধ্যে রাজ্যের স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠনের উপর কোনও প্রভাব না পড়ে, তাও দেখতে হবে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট, রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনকে সমন্বয় রেখে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিল। সেই মতো, এদিন নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এবং স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিজি রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতে আইজি, বিএসএফ, যিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এদিন এই বৈঠকের পরই রাজ্যের 22টি জেলায় অশান্তি রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় সাধনে 22 জন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
যেহেতু নির্বাচনী আচরণবিধি এই মুহূর্তে লাগু নেই, কাজেই আইন-শৃঙ্খলা এই মুহূর্তে রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয় ৷ আদালতের নির্দেশে তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধির বিষয়টি নবান্নকেই জানানো হয়েছে বলে বিএসএফের আইজি'র তরফে জানানো হয়েছে। হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটে গেলেও ভোট পরবর্তী হিংসার কথা ভেবে রাজ্যে 10 দিন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেই বাহিনী কোন কোন জেলায়, কত সংখ্যক মোতায়েন করা হবে, কীভাবে মোতায়ন করা হবে, তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: ভোটে হিংসা ও গণহত্যার অভিযোগে রাজপথে প্রতিবাদ সেলিম-নওশাদদের
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী যাতে বিশেষভাবে নজর দেয়, তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে রাজ্যের তরফ থেকে বলা হয়েছে। এই বৈঠক থেকে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদেরও বাহিনীকে সব ধরনের সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। মোটের উপর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হিংসা রুখতে কড়া নবান্ন। অশান্তির ঘটনাকে রাজ্য প্রশাসন যে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাও এদিনের একাধিক সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।