কলকাতা, 4 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে হিংসার রাজনীতি । খবরের শিরোনামে খুন, হুমকি, হানাহানির ঘটনা ৷ এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের অভিযোগ গ্রহণ করতে ডিজিটাল সেল খুলল সিপিআইএম । যার পোশাকি নাম 'পাহারায় পাবলিক'। মঙ্গলবার সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ।
মুজফফর আহমেদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, "গড়তে হবে মানুষের পঞ্চায়েত । আদায় করতে হবে হকের দাবি । বন্ধ করতে হবে গ্রাম বাংলার লুট । তৃণমূলের জঙ্গলরাজ আর তৃণমূল-বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে লড়ছে বাংলার মানুষ । নির্বাচনী প্রক্রিয়া অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে । পুলিশ প্রশাসনের একাংশের মদতে তৃণমূল-বিজেপির ভোট লুটের চেষ্টা বা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের যে কোনও তথ্য জানান আমাদের এই ফর্মের মাধ্যমে । মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার লড়াইয়ে বুথ আগলাবে মানুষই । পাহারায় থাকবে পাবলিকই । আপনার তথ্য সম্পূর্ণ গোপন থাকবে ।"
এই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বাম নেতা ৷ সেলিমের কথায়, সাধারণ মানুষ সাংবাদিকের ভূমিকা পালন করবে । যেখানে মূল ধারার সংবামাধ্যমগুলি পৌঁছতে পারবে না । নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসন, ব্লক প্রশাসক, নির্বাচন কমিশন রিয়েল টাইমে জমা দেব । ডকেট হবে । মেইল করে জমা দেওয়া হবে ।"
আরও পড়ুন: কুলতলিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল প্রার্থী, কাঠগড়ায় সিপিএম-এসইউসিআই
এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন সেলিম । তিনি বলেন, কমিশন কত বড় অপদার্থ তা বোঝা যাচ্ছে । ব্লুটুথ নিয়ে কালীঘাটের দিকে চেয়ে আছে । কখন কালীঘাট থেকে অর্ডার আসে । নির্বাচন কমিশন কিছু করলে মহম্মদ সেলিমকে পাহারায় পাবলিক চালু করতে হত না ।
সেলিমের কটাক্ষ, "গোটা দক্ষিণ 24 পরগনার জুড়ে এ সব হচ্ছে । ভাইপোর খাস তালুক । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পরে দক্ষিণ 24 পরগনার মগরাহাটে প্রথম গুলি চলে । ভাইপো একটা নয় । রাজীব গান্ধীর ভাইপো প্রথমে বিজেপিতে গিয়েছিলেন । এখন রাহুল গান্ধি লড়াই করছে । এই ভাইপো নিয়েও সতর্ক থেকো । ভালনারেবল । শরদ পাওয়ার এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাইপো রাজনীতি শেখাচ্ছেন ।"
এ দিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকেও একহাত নেন মহম্মদ সেলিম ৷ তিনি বলেন, "মানুষ কী বলছে সেটা বড় কথা । রাজ্যপাল কী ঘোড়া ছোটাচ্ছেন ? রেস কোর্স আছে ! রাজভবনে অনেক জায়গা আছে । বিজেপি নেতারা আক্রান্তের কাছে যেতে পারছেন বলে রাজ্যপাল যাচ্ছেন । উনি কে ? প্রশাসনিক হেড নন । প্রশাসনের হেড তিনি । ওই গ্যাঙের হয়ে কাজ করছেন । এখানেই তো বিজেপি তৃণমূল সাঁটগাট । কোনও রাজ্যপালকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়োগ করা হয় । রাজ্যপাল পদ হোম মিনিস্ট্রি থেকে নমিনেটেড । মানুষের কথা বলো । এই যে লুটের প্রক্রিয়া চলছে রাজ্যপালকে তার বাইরে দেখি না । শেখানো বুলি আওড়ানো শেষ করতে হবে ।"