কলকাতা, 27 ডিসেম্বর: কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যের হাসপাতালগুলি কতটা প্রস্তুত, তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত রাজ্যে মকড্রিল (Covid Mock Drill) করার নির্দেশ দিয়েছিল । সেই মতো সমস্ত এ রাজ্যে চলল এই প্রক্রিয়া । কলকাতার 5টি হাসপাতাল - এমআর বাঙুর, আরজি কর, শম্ভুনাথ পণ্ডিত, মেডিক্যাল কলেজ এবং বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে এই মক ড্রিলের ব্যবস্থা করা হয় (Covid Scare in Bengal)।
মঙ্গলবার সকালে মকড্রিল হয় এমআর বাঙুর হাসপাতালে । হাসপাতালের সুপার এবং সিএমওএইচ হাসপাতালের সম্পূর্ণ দিক খতিয়ে দেখেন । তারপর হাসপাতালের সিএমওএইচ মুক্তিসাধন মাইতি জানান, "অক্সিজেন সাপ্লাই প্ল্যান্ট, বিএসএফ, এলএমও প্ল্যান্টগুলি সচল আছে । ভেন্টিলেটর, বাইপাপ মেশিন, আউটপুট মনিটর, ড্রাই রান করানো হয়েছে । এই রিপোর্ট আমরা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠাব । মেডিসিনের সাপ্লাই আছে, অসুবিধা নেই । এই মুহূর্তে হাসপাতালে মোট 58টি বেড রয়েছে । 18টি সিসিইউ, 39টি পুরুষ ও 11টি মহিলা বেডের ব্যবস্থা রয়েছে । এছাড়া 750টি বেডের ক্যাপাসিটি রয়েছে ।"
অন্যদিকে, মকড্রিল সম্পূর্ণ হয়েছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেও । সেখানে একজন করোনা রোগীকে স্ট্রেচারে বসিয়ে কীভাবে তাঁকে একের পর এক বিভাগে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে, সেই বিষয়ও তুলে ধরা হয় । হাসপাতালের অ্যাডিশনল সুপার ত্রিদীপ মুস্তাফি জানান, "আমাদের মাস্ক থেকে পিপিই কিট - সব পর্যাপ্ত রয়েছে কি না তা দেখে নিয়েছি । পাশাপাশি সব যন্ত্র সচল আছে কি না তাও পরীক্ষা করে নেওয়া হয়েছে । এছাড়া 24 ঘণ্টা আরটিপিসিআর ও র্যাপিড টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে । রক্ত পরীক্ষার সব ব্যবস্থাপনা থাকছে 24 ঘণ্টা । এই মুহূর্তে 50টি বেড আরজি করে প্রস্তুত রয়েছে । তার মধ্যে 20টি ভেন্টিলেটর বেড ও 30টি এইচডিইই বেড । এছাড়াও 111টি আইসোলেশন বেড রয়েছে ।" রাজ্যের প্রায় 40টি হাসপাতালে করা হয় মকড্রিল । আর এই রিপোর্টটি দেখা যাবে হাসপাতালের নিজস্ব যে পোর্টাল রয়েছে সেগুলিতে । কোভিডের সংক্রমণ বাড়লে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর যাতে চাপ না পড়ে, সেই দিকটা শক্ত করতে কেন্দ্রের এই ব্যবস্থা ।
আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বুধে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক নবান্নে
বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে বাইপ্যাপ সাপোর্ট ব্যবস্থাকে খতিয়ে দেখা হয়েছে ৷ দেখা হয়েছে ভেন্টিলেটর মেশিন এবং অক্সিজেন ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাকেও । হঠাৎ করে কোভিডগ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা করা যাবে কি না তাও খতিয়ে দেখা হয় । এ ছাড়াও জেলায়-জেলায় কতজন করোনার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত ডাক্তার রয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের জোগান আছে কি না, করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ও পরিকাঠামো, অ্যাম্বুলেন্সের (লাইফ-সাপোর্ট থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যাও) প্রাপ্যতার মতো বিষয়ও খতিয়ে দেখা হয়েছে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ।
প্রসঙ্গত এ দিন এই মকড্রিল পর্যবেক্ষণের জন্য ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য । সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও । মোটের উপর এই মক ড্রিলের মাধ্যমে কতটা প্রস্তুত রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, তা আরও একবার খতিয়ে দেখল নবান্ন । মোটের উপর প্রতিটি হাসপাতালেরই রিপোর্ট সন্তোষজনক । কয়েকটি জায়গায় ছোটখাটো সমস্যা প্রকাশ্যে এসেছে ৷ সেগুলি সিএমওএইচ স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে পর্যালোচনা করে সংশোধনের চেষ্টা করা হবে বলে জানা গিয়েছে ।