কলকাতা, ১১ মার্চ : অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বসেছিলেন অনশনে। সেই অবস্থায়ই গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার এক চাকরিপ্রার্থীর গর্ভপাত হয়ে যায়। গতরাতেই আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ওয়েটিং লিস্টে থাকা SSC চাকরিপ্রার্থীরা। রিলে অনশনের বদলে টানা অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আজ থেকে শুরুও হয়ে গেছে তাঁদের টানা অনশন কর্মসূচি।
এবিষয়ে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অর্পিতা দাস বলেন, "আমাদের এই অনশনে একজন SSC প্রার্থীর মিসক্যারেজ হয়ে গেছে। তিনি দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আমরা তাঁকে চিকিৎসার জন্য বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি কারণ শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। তাঁর পরিবারের লোকজন এসে নিয়ে গেছেন।"
ইতিমধ্যে মোট ৪৪ জন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনশন চলাকালীন। তার মধ্যেই গতকালের এই ঘটনায় শোকের ছায়া অনশন মঞ্চে। এই নিয়ে অর্পিতা বলেন, "এটা অমানবিকতার দিকে চলে যাচ্ছে। সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, উনি তো জনদরদী নেত্রী, আমাদের প্রতি এত অমানবিক হচ্ছেন কীভাবে। ১২ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এইভাবে রাস্তায় বসে থেকে কাতরভাবে কেন জানাতে হচ্ছে ? তাঁর তো বোঝা উচিত, আজ আমাদের জীবন থেকে ছ'টা বছর চলে গেল, তার কিন্তু কোনও মূল্য ফেরত দিতে পারবেন না।"
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অনশনে বসেছেন নবম থেকে দ্বাদশের ওয়েটিং লিস্টে থাকা SSC চাকরিপ্রার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে গত সপ্তাহে আলোচনার পর কোনও সদুত্তর না পাওয়ায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তবে, আজ থেকে এই আন্দোলন আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবার আর রিলে অনশন নয়, আজ সকাল থেকে টানা অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। এবিষয়ে অর্পিতা আরও বলেন, "আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে আমরা প্রত্যেকেই এখন অনশনের দিকে যাচ্ছি। কোনও রিলে অনশন নয়, আমরা প্রত্যেকেই টানা অনশনে থাকব। আর এর পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন দপ্তরে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রার্থনা করব উনি যেন আমাদের অবস্থানে এসে এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন। যাতে বিষয়টির সমাধান হয়।"
রিলে অনশন থেকে টানা অনশন। কিন্তু, এতেও যদি সদুত্তর না পাওয়া যায় তাহলে কী করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অর্পিতা বলেন, "অনশন চলবে। আর অনশনরত অবস্থায় আমাদের যদি মরে যেতে হয় তাই হবে। কেন না আমরা শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে চাই না। ছ'বছর ধরে আমরা মৃত্যু যন্ত্রণার মধ্যে দিয়েই চলছি। আর আমরা খালি হাতে ফিরে যেতে চাই না।"