কলকাতা, 28 মে: প্রায় সময়ই দেখা যায় মিড-ডে মিলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে আসে । কখনও খাবারে দেখা যায় আরশোলা-টিকটিকি, তো আবার কখনও খাবারের মূল্য নিয়ে সমস্যা । যাকে ঘিরে লেগেই থাকে রাজ্য বনাম কেন্দ্রের দ্বন্দ্ব । এই দায় ঠেলাঠেলির মাঝে রাঁধুনিরা নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে গেলে হুমকি দেয় শাসক শিবির । তাই এবার নিজেদের অভিযোগ তুলে ধরে রাস্তায় নামছে মিড-ডে মিল রাঁধুনীরা । তাঁদের কথা অনুযায়ী, মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ মূল্য থেকে রাঁধুনীদের সমস্যার কথা বলতে গেলেই শাসক শিবির থেকে হুমকি শোনা যায় । তাই তাঁরা যথেষ্ট আতঙ্কিত । এই নিয়ে বিডিও অফিসে একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করলেও কোনও সদুত্তর মেলেনি বলেও জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অফ মিড-ডে মিল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা সংক্ষেপে আম্মা সংগঠনের এক সদস্য সুপর্ণা ঘোষ । তবে এবার তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে নাগরিক সমাজ ।
মিড-ডে মিলের জন্য নিত্যদিন রান্না করে থাকেন তাঁরা । তবে তাঁদের অভিযোগ শোনার কেউ নেই । তাই রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের অভাব অভিযোগ তুলে ধরলেন 'অ্যাসোসিয়েশন অফ মিড-ডে মিল অ্যাসিস্ট্যান্ট' বা 'আম্মা'। তাঁদের দাবি, মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দমূল্য বাড়াতে হবে ৷ স্কুলের সব শ্রেণির পড়ুয়াদেরকে এই প্রকল্পের আওতায় আনতে হবে । মিড-ডে মিলের কর্মীদের সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ও চাকরির স্বীকৃতি দিতে হবে । মিড-ডে মিল রাঁধুনী মহিলাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দিতে হবে । এছাড়াও দুর্ঘটনার জন্য যে ভাতা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে এবং চাকুরিরত ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর চাকরি পরিবারের অন্য আরেকজনকে দেওয়ার যে রেওয়াজ রয়েছে তাও যেন তাঁদের ক্ষেত্রেও জারি করা হয় ।
আরও যে বিষয়গুলি তাঁরা তুলে ধরেছেন তা হল, স্কুল খোলা থাকে 10 মাস ৷ বাকি দিনগুলি ছুটি থাকে বিভিন্ন কারণে । তাই মিড-ডে মিল রাঁধুনীরা বেতন পান ওই দশমাস । এই নিয়ম অবিলম্বে বন্ধ করে 12 মাসেরই বেতন তাঁদের দেওয়া হয় তা নিয়ে মুখ খোলেন তাঁরা । তবে তাঁদের অভিযোগ, যতবার বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে আম্মা সংগঠন ততবারই হুমকি শুনতে হয়েছে শাসক শিবির থেকে ।
তাই এবার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার চিন্তাভাবনা নিয়েছেন এই সংগঠন । আগামী 30 মে কলকাতায় শিয়ালদা থেকে রানি রাসমণি পর্যন্ত মিছিল করে একটি জমায়েতের ডাক দিয়েছে মিড-ডে মিলের সঙ্গে যুক্ত রাঁধুনীরা । এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের দাবিপত্র পেশ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিড-ডে মিল সহায়িকা সমিতি । তবে ইতিমধ্যেই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে নাগরিক সমাজ । তার মধ্যে রয়েছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক সেন, বিশিষ্ট বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সমাজের আরও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ৷
আরও পড়ুন : জলের অভাবে 2 দিন ধরে বন্ধ মিড-ডে মিল, সমস্যায় খুদে পড়ুয়ারা