কলকাতা, 15 জুন: কয়েকদিন আগেই জেলায় গিয়ে মানস ভূঁইয়াকে জেলা সংগঠনে আরও বেশি করে সময় দিতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এবার মানসের মন্ত্রিত্বের বোঝা কমালেন মুখ্যমন্ত্রী । তৃণমূল দলীয় সূত্রে খবর, সংগঠনের দিকেই মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে মানস ভূঁইয়াকে । আর তার জেরেই মানস ভূঁইয়ার মন্ত্রীত্বের বাড়তি ভার কমিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দায়িত্ব লাঘব করতে এই মুহূর্তে তাঁকে পরিবেশ দফতর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ দফতরের দায়িত্ব আপাতত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতেই রাখছেন। তবে যতদূর জানা যাচ্ছে মন্ত্রিসভায় থাকছেন মানস ভুঁইয়া ।
সেক্ষেত্রে তিনি শুধু জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীর দায়িত্বই সামলাবেন। একইসঙ্গে, জানা গিয়েছে, আপাতত নতুন কোনও মুখকে মন্ত্রিসভায় আনা হচ্ছে না। সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট । তার আগে রাজ্য মন্ত্রিসভায় নতুন কোনও মুখ আনতে রাজি নয় মুখ্যমন্ত্রী । তবে যতদূর জানা যাচ্ছে মানস ভূঁইয়ার পরিবেশ দফতরের সঙ্গে মোট ন'টি দফতর এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতেই রাখছেন ।
এক্ষেত্রে যতদূর জানা গিয়েছে, দল চাইছে তিনি তাঁর নিজের জেলায় সাংগঠনিক কাজে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে এই প্রবীণ নেতাকে। কয়েকদিন আগেই নবজোয়ার কর্মসূচিতে মেদিনীপুর জেলায় এসে মানস ভূঁইয়াকে জেলা সংগঠনে আরও বেশি করে সময় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে সময় তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, "মানস শুধু সবং নিয়ে পড়ে থাকলে হবে ? জেলাটাও তো আপনার। আপনি তো বাংলার মন্ত্রী।" সে সময় থেকেই মনে করা হচ্ছিল মানস ভূঁইয়াকে জেলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে তারপরে এই বিষয়ে আর কোনও উচ্চবাচ্য হয়নি দলে বা প্রশাসনের অন্দরেও। এদিন মানস ভুঁইয়ার থেকে একটি মন্ত্রীত্ব নিয়ে নেওয়ার পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রভাব আছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল । তবে মনে করা হচ্ছে শীঘ্রই জেলা সংগঠনে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তাঁকে।
একইসঙ্গে তৃণমূলের একটা সূত্রে মনে করা হচ্ছে, আগামী দিনে মানস ভূঁইয়াকে আবার রাজ্যসভায় পাঠানো হতে পারে। চলতি বছরের অগস্ট মাসে রাজ্যের ছয় রাজ্যসভার আসন ফাঁকা হচ্ছে। এই আসনগুলিতে এখন আছেন দোলা সেন, ডেরেক ও ব্রায়েন, শান্তা ছেত্রী, সুখেন্দু শেখর রায়, সুস্মিতা দেব ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। এক্ষেত্রে কংগ্রেস যেহেতু বিধানসভায় শূন্য তাই নতুন করে আর কারও রাজ্যসভায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে তৃণমূলের হাতে পাঁচটি রাজ্যসভার আসনই থাকছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেখানে একটি আসনে প্রার্থী করা হতে পারে মানস ভূঁইয়াকে। তাই আগেভাগেই তাঁর দায়িত্ব লাঘব করে তাঁকে জেলাস্তরে সাংগঠনিক কাজে লাগাতে চাইছে দল। আর সেই জায়গা থেকেই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
আরও পড়ুন: 17 জুন কালীঘাটে তৃণমূলের নির্বাচনী বৈঠক, কৌশল ঠিক করতে বসছেন মমতা
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে রয়েছে স্বরাষ্ট্র, পার্বত্য বিষয়ক দফতর, পার্সোনেল অ্যান্ড এডমিনিস্ট্রেটিভ রিফর্ম, স্বাস্থ্য, তথ্য ও প্রযুক্তি, পরিকল্পনা এবং পরিসংখ্যান, সংখ্যালঘু উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর। সেই সঙ্গে, এদিন থেকে সংযোজিত হচ্ছে পরিবেশ দফতরের দায়িত্বও।