কলকাতা, ২১ ফেব্রুয়ারি : "এত বড় সাহস! একটা কথা বলতে গেলেই বলে দিচ্ছে ও পাকিস্তানের পক্ষে, এ ভারতের পক্ষে। ওরা একা দেশপ্রেমিক আর আমরা সবাই দেশের শত্রু। এদেশে কে থাকবে, কে থাকবে না ওরা ঠিক করছে। বাংলার মানুষ শক্তিশালী হয়ে, দৃঢ়চেতা হয়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।" আজ দেশপ্রিয় পার্কে মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ঠিক এভাবেই নাম না করে BJP-র বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ সকালে একুশে উদ্যানের পর বিকেলে দেশপ্রিয় পার্কে রাজ্য সরকার আয়োজিত শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গান, কবিতাসহ বাংলা সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন উপস্থিত শিল্পীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলা ভাষা নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলা ভাষা নিয়ে বলতে গিয়ে কার্যত নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। বলেন, "আমরা কখনও বলতে পারি না, অন্য রাজ্য থেকে ভাই বোনেরা আসবে, তারা থাকতে পারবে না। একটা ঘটনা ঘটেছে বলে কাশ্মীরি শালওয়ালাকে দরজা থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এটা হতে পারে কি? যদি কেউ অন্যায় করে থাকে নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া যেতে পারে। যদি কেউ মনে করে, তারা যাকে চাইবে সেই থাকবে, অন্য কেউ থাকবে না, সেটা হবে না। আমি এই থিওরিতে বিশ্বাস করি না এবং আগামীদিনেও করব না। এত দুঃসাহস কী করে হয়? এক বন্ধু ২০ বছর ডাক্তারি করছে বাংলায়। তার ধর্মকে আঘাত করে বলছে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও। এত ক্ষমতা তাঁদের।"
তিনি আরও বলেন, "কেউ কেউ বাংলায় এসে বলছে একটা রাজনৈতিক দলের ঘৃণ্য রাজনীতি দেশটাকে ভাগ করতে চাইছে। আমার ভাষা কাউকে ঘৃণা করতে শেখায়নি। বাংলাকে জানতে হলে বাংলার মাটিকে চিনতে হবে। বাংলা ভাষাকে জানতে হলে বাংলার সংস্কৃতিকে চিনতে হবে। বাংলার সংস্কৃতি জানতে হলে ভারতীয় সভ্যতাকে জানতে হবে। আর ভারতের সভ্যতাকে জানতে হলে বিশ্বের সভ্যতাকে জানতে হবে।"
বেশ কয়েকদিন ধরেই BJP-র বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজও একইরকমভাবে সভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আক্রমণ করলেন তিনি। বলেন, "জ্ঞান দিচ্ছে। জ্ঞান দাতা হয়ে গেছে। বাংলার মানুষ শক্তিশালী হয়ে, দৃপ্তশালী হয়ে, দৃঢ়চেতা হয়ে রুখে দাঁড়ান এদের বিরুদ্ধে। এই ধর্ম ভারতবর্ষের ইতিহাসে নেই। ইতিহাসকে বদলে দিচ্ছে। পাশবিক, অমানবিক, দানবিক ধর্ম তৈরি করে বলে দিচ্ছে কে দেশে থাকবে, কে থাকবে না। কে রাজ্যে থাকবে, কে থাকবে না। কে কোন ভাষায় কথা বলবে, কে কোন ভাষায় কথা বলবে না। কে কী খাবে, কে কী খাবে না। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমি সবাইকে বলছি রুখে দাঁড়ান।"