কলকাতা, 17 মার্চ: যুবনেত্রী থাকার থাকার সময় থেকেই সহকর্মীদের হাঁড়ির খবর রাখেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী হয়েও চিত্রটা একই রয়েছে । কর্মীরা বলছেন, হাজার কাজের ভিড়ে দল তাঁর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, শুক্রবার দলের সাংগঠনিক বৈঠকে তা বোঝালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । চুন থেকে পান খসলে তা যে তাঁর নজর এড়ায় না, তারও প্রমাণ দিলেন (Mamata Banerjee slams TMC Leaders in Party Meeting) ।
কী হয়েছে সাংগঠনিক বৈঠকে ?
সাধারণত দলীয় বৈঠকে দলের নেতা-কর্মীদের কাজকর্ম নিয়ে সমালোচনা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো । এর মধ্যে কিছু নতুনত্ব নেই । তবে এদিন মাইক্রো লেভেলে গিয়ে দলের নেতাদের এমন কিছু ভুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, যা অবাক করল তৃণমূলের অনেক নেতাকেই । এই সমালোচনার মধ্যে যেমন রয়েছে দলের বিধায়কের ট্রেনে যেতে যেতে দলকে নিয়ে নিন্দে করা ৷ তেমনই রয়েছে বিড়ালের কামড় খেয়ে বিধায়কের সাহায্য চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঘটনা ।
এদিন দলের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে একাধিক বিষয়ে দলের নেতাদের কড়া সমালোচনা করেছেন দলনেত্রী । সূত্রের খবর, এদিন দলের টুইটার হ্যান্ডেলকে অনুসরণ না-করার জন্য এদিন দলনেত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েছেন শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা। এর মধ্যে বেশিরভাগই কলকাতার নেতা হলেও ওই তালিকায় সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, এমনকি এক যুবনেত্রীর নামও রয়েছে । দলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ এবং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যকেও শুনতে হয়েছে, কেন এই দুই সংগঠনের বিস্তার সঠিকভাবে হচ্ছে না । যদিও দলনেত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়ে শুরুতেই নিজের খামতি স্বীকার করেছেন সায়নী ।
প্রসঙ্গত, সাগরদিঘী উপনির্বাচনের আগে ট্রেনের মধ্যেই দলের সমালোচনা করছিলেন দুই বিধায়ক । সূত্রের খবর, আচমকা এদিন বৈঠকে তাদের আলোচনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন দলনেত্রী । পালটা তিনি প্রশ্ন করেন, দল আপনাদের বিধায়ক করেছে । সেই দলের প্রতি একটু ভালোবাসা থাকবে না ?
আরও পড়ুন: মমতা-অখিলেশ বৈঠক থেকেই কি অকংগ্রেসী ও অবিজেপি জোটের সলতে পাকানো শুরু !
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা অধীর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন ৷ এমনই রিপোর্ট তাঁর কাছে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো । এই অভিযোগের জবাবে ওই দুই নেতা কী বলেছেন তা অবশ্য জানা যায়নি । আলটপকা মন্তব্যের জন্য দলনেত্রীর তরফে সতর্কবার্তা গিয়েছে অনেকের কাছে । সেই তালিকায় যেমন হুগলির এক বিধায়ক রয়েছেন, তেমনই রয়েছন কামারহাটির বিধায়কও ।
এদিন নদিয়ার সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে দলীয় বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা । জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে জেলার বিধায়করা কী করছেন, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি । দলনেত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েছেন দলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতিও । জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে তাকে দলনেত্রীর ধমক, দল দায়িত্ব দিলেও সঠিকভাবে পালন করেননি তিনি । আর সে কারণেই তাঁকে সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান করে সভাপতি করা হয়েছে অপেক্ষাকৃত যুবনেতা মোশারফ হোসেনকে ।