কলকাতা, 18 অক্টোবর: 'বস্তি' নয়, 'উত্তরণ'। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বাস্তবিক উত্তরণ ঘটতে চলেছে বস্তিবাসীদের। প্রসঙ্গত, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো উদ্বোধনের শেষ দিন। এ বছর নিজে যেতে না পারলেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে কলকাতা থেকে শুরু করে শহরতলি তথা জেলার এক হাজারেরও বেশি পুজোর উদ্বোধন করেন মমতা। সেই মতো মঙ্গলবার কলকাতা শহরের 12টি পুজোর উদ্বোধন করেন মমতা। সেখানেই তিনি কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে জানিয়ে দেন এবার থেকে বস্তিকে আর যেন বস্তি না বলা হয়। তার নাম হবে 'উত্তরণ'।
মঙ্গলবার আলিপুরের 'আমরা সকল পল্লি সমিতি'-র পুজোর উদ্বোধন করেন মমতা। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম । মূলত বস্তির মানুষদের নিয়েই এই পুজো ৷ মন্ত্রী জানান, এই বস্তির বাসিন্দারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের কট্টর সমর্থক । আর তাই পুজোটির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বহুদিনের সম্পর্ক । স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় সকলকেই নাম ধরে ধরে চেনেন মমতা।
সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ওদের আর বস্তি বলবে না। ওদের মধ্যেও প্রাণ আছে। ওরাও ভালোবাসা দিতে জানে। ওদের মনুষ্যত্ব আছে ৷ যা হয়তো অন্য অনেকেরই নেই । আর তাই বস্তি কথাটা তুলে দাও ।" বস্তি শব্দের বদলে নতুন নামকরণও করে দেন মুখ্যমন্ত্রী । সেখানেই বস্তির বদলে পুরমন্ত্রীকে 'উত্তরণ' শব্দটি ব্যবহার করার কথা বলেন । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে ফিরহাদও জানান, পুরনিগমের সরকারি কাজে বা অন্যত্র তিনি এই শব্দটিকে সংশোধন করে নেবেন। মমতার প্রস্তাব, এগুলিকে যেন উত্তরণ-1, উত্তরণ-2, উত্তরণ-3, এভাবে নামকরণ করা হয় ।
এদিন এই পুজো উদ্বোধনে ফিরহাদ হাকিমের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, রাজ্য সরকার যে বস্তিবাসীদের ঠিকা-স্বত্ব দিচ্ছে তা তারা পেয়েছেন কি না । এর উত্তরে মেয়র জানান, সকলেই ঠিকা-স্বত্ব পেয়ে গিয়েছেন। শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঠিকা-স্বত্ব পেয়ে গেলে তো সবটা নিজেদেরই জায়গা। তাহলে এটাকে বস্তি বলব কেন ? এটা আমার মাটির কুটির, আমার ভালোবাসার জায়গা। আমার মায়ের আঁচল । বস্তি বলে কিছু হয় না। আর তাই বস্তি কথাটা তুলে দাও। প্রয়াস বা এই জাতীয় কিছু নাম দাও ।" পরে তিনিই নাম ঠিক করে দেন 'উত্তরণ'।
আরও পড়ুন : উত্তর কলকাতার তিন এলাকার 382 বস্তি ও ঝুপড়িবাসী পরিবার পাচ্ছে 'বাংলার বাড়ি'