কলকাতা, 15 মে: নীতি আয়োগের বৈঠকে তাঁকে বলতে দেওয়া হয় না বলে সোমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, আগামী 27 মে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি । যদিও এ দিন সাংবাদিকদের তরফ থেকে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল দিল্লি সফরের সময়ে বিরোধী জোট নিয়ে ডাকা বৈঠকে কি তিনি যোগ দেবেন ? তিনি এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, এমন কোনও বৈঠকের খবর এই মুহূর্তে তাঁর কাছে নেই ।
এ দিন নীতি আয়োগ নিয়ে বলতে গিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে পরিকল্পনা কমিশনে প্রতিটি রাজ্যের কথা সমানভাবে শোনা হতো । এখন নীতি আয়োগ বৈঠকে গিয়ে 2 ঘণ্টা বসে থাকতে হয় । কোনও কথা শোনা হয় না ।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘সূর্যাস্তের আগে তো আমার মুখই দেখা যায় না । যেহেতু রাজ্যের নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল । আমি সবার শেষে বলার সুযোগ পাই । তাও ওরা ঠিক করে দেবে কোন কোন বিষয়ে কথা বলা যাবে । কোন কোন বিষয় নয় ।’’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলার স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলি নিয়ে এবারও তিনি নীতি আয়োগের বৈঠকে সরব হবেন । সেই কারণেই যাচ্ছেন তিনি । তিনি জানান, তাঁকে হয়তো বলতে দেবে সবার শেষে । রাত্রিবেলায় । তাতে কী করা যাবে ! তবুও তিনি রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হবেন ।
এদিন কর্ণাটক নির্বাচন পরবর্তী অবস্থায় বিরোধী জোটের সমীকরণ নিয়েও তাকে প্রশ্ন করা হয় । মমতা জানান, তিনি কোনও জাদুকর নন অথবা তিনি কোনও জ্যোতিষীও নন । ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে, তা দেখার ক্ষমতা তাঁর নেই । যেখানে আঞ্চলিক শক্তিগুলি শক্তিশালী, সেখানে বিজেপি কোনোভাবেই সফল হতে পারছে না । কর্ণাটকে বিজেপির ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে মানুষ । তাই সকলকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে বলে বার্তা দেন তিনি ।
এ দিন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, ‘‘আমরা কর্ণাটককে সমর্থন করব । অথচ, আপনারা রোজ এখানে আমাদের সঙ্গে লড়াই করবেন, এটা তো ঠিক নীতি নয় ।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে বারবার শোনা গিয়েছে, যেখানে যে শক্তিশালী সেখানে সে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে বাকিরা সাহায্য করবে, এই তত্ত্ব । সেই কথা এদিন আবার বলেন তিনি ৷ মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় যেমন আমরা লড়াই করব । দিল্লিতে আপ, বিহারে জেডিইউ, আরজেডি, কংগ্রেস । চেন্নাই, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা-সহ অন্য রাজ্যেও এই ভাবে হবে । উত্তরপ্রদেশে অখিলেশরা প্রাধান্য পাবে । বলছি না, কংগ্রেস সেখানে লড়াই করতে পারবে না । আলোচনা করে ঠিক হোক । বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সবাই তো কিছু না কিছু ভাবছে । সকলে মিলেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত ।’’