কলকাতা, 5 জুন: বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও তর্কে জড়াতে চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই মুহূর্তে মানুষের পাশে থাকতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ৷ এমনকী সিবিআই নিয়ে বিতর্কেও যেতে নারাজ মমতা।
সোমবার নবান্ন টোল প্লাজায় রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজেই এই প্রসঙ্গে উত্থাপন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রাজনীতি নয়, বরং তিনি এখন মানুষের পাশে থাকতে চাইছেন। একইসঙ্গে, এদিন আরও একবার মুখ্যমন্ত্রী রেলের বিরুদ্ধে সত্য গোপনের অভিযোগে সরব হয়েছেন ৷ এদিন মমতা বলেন, "আমি চাই সত্য প্রকাশ্যে আসুক।" এদিন সিবিআই তদন্ত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্যে বিশেষ আগ্রহী নন তিনি। আর সেকারণে এই বিষয় নিয়ে তিনি মন্তব্য করতেও রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রী ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "আমি একমাত্র নজরে রাখছি দুর্ঘটনায় আহতদের শারীরিক অবস্থা এবং তাদের পরিবারগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমরা ভাবছি কীভাবে এই পরিবারগুলিকে রক্ষা করা যায়। এখনও অনেকগুলি দেহ সনাক্ত করা যায়নি। এখনও আমার নজরে যতটা আছে তাতে 120 জনের মৃতদেহ ওই রাজ্যে আছে। সেগুলি এখনও সনাক্ত হয়নি।" এর সঙ্গেই, এই দুর্ঘটনায় এখনও অসংখ্য মানুষ আহত অবস্থায় রয়েছেন বলেও জানান তিনি। তাদের কীভাবে দ্রুত সুস্থ করে তোলা যায়, তা নিয়েই মূলত ভাবনা-চিন্তা করছে রাজ্য প্রশাসন ৷ অন্যদিকে তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন হওয়া রেল দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দিয়ে কোনও ফল পাওয়া যায়নি, এদিন তা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি সিবিআই তদন্তে তাঁর বিশেষ ভরসা নেই, বরং মুখ্যমন্ত্রী অনেক বেশি ভরসা করছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনের তদন্তের ওপরই। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনার সময় আমি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তার কোনও ফল এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি। সাঁইথিয়াতেও আমরা সিবিআই দিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি। সিবিআই তো অপরাধমূলক বিষয়ে তদন্ত করে। কিন্তু এটা তো দুর্ঘটনার বিষয়। এর জন্য রেলওয়ে সেফটি কমিশন রয়েছে। তারা এই নিয়ে দ্রুত তদন্ত করছে। আমরা চাই মানুষের সামনে সত্য আসুক। এটা সত্য লুকোনোর সময় নয়। যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করুন। তাদের পাশে দাঁড়াবো, নাকি ওরা ধামাচাপা দেয়ার জন্য রোজ একটা করে রাজনৈতিক হাওয়া দেবে, সেটাকে নিয়ে তর্ক করব।"
আরও পড়ুন: বিদেশযাত্রায় বাধা দিয়ে রুজিরাকে ইডির নোটিশ দেওয়াকে অমানবিক বললেন মুখ্যমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "আমি ওদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে যাব না। আমি চাই যে পরিবারগুলি সব হারিয়েছে তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি আমার মুখ্য সচিব স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশে ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সকলে এক হয়ে কাজ করছে। আমাদের প্রচুর ডাক্তার এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থলে কাজ করছে। যতটা সম্ভব আমরা একোমোটেড করার চেষ্টা করছি।"