কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: রেল যদি কাউকে উচ্ছেদ করতে চায়, তাহলে পুনর্বাসন দিতেই হবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) এমন বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । শনিবার নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে এই দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী । যদিও এদিন এই বৈঠকের পরে বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শনিবার রেল বোর্ডের সদস্য (ওয়ার্কস) ব্রিজেশ কুমার বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রেলের প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না । বহু ক্ষেত্রে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে রেলকে । এর ফলে প্রকল্প রূপায়ণের জন্য সময় বাড়ছে ৷ বাড়তি খরচও গুনতে হচ্ছে তাঁদের ।
প্রসঙ্গত, লুধিয়ানা-ডানকুনি ফ্রেড করিডোরের (Freight Corridor) জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে । একই ভাবে চলে রেল ব্রিজের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা যায় । জানা গিয়েছে, এদিন সেই বিষয়টি রেলের তরফ থেকে তোলা হয়েছে । পালটা রাজ্য সরকারের দাবি, জনগণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ভালো কাজ করার ক্ষেত্রেও রেল সরকারের কাছ থেকে টাকা চাইছে ।
রেলের বিভিন্ন অব্যবহৃত জমিগুলিকে রাজ্য সরকার কোনও গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করতে পারে কি না, সেই বিষয়টিও উঠে এসেছে বৈঠকে । সূত্র মারফত এমনই জানা গিয়েছে । মূলত, রেলের বিভিন্ন অব্যবহৃত জমিতে যেখানে বস্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে, সেখানে গরিব মানুষদের পাট্টা দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে বলে খবর । শুধু রেলের জমিই নয়, রাজ্যের মধ্যে থাকা কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের অব্যবহৃত জমিও যাতে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা যায়, সেই বিষয়টিও বিবেচনা করার জন্য বলা হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ।
এদিকে, রেলের তরফে ব্রিজেশ কুমার জানান, রেলের বহু জমি জবরদখল হয়ে রয়েছে । বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় রেলের বহু প্রকল্প চলছে । কিন্তু বেশ কয়েকটি জায়গায় জমি জবরদখল হয়ে আছে । তাই জমি জট কাটানোর অনুরোধ জানান তিনি। সেই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জবরদখলকারীদের রেলের জমি থেকে উচ্ছেদ করার কথা বলেন। তখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নয়, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে পূর্ব ঘোষিত নীতি। অতীতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় একথা শোনা গিয়েছে একাধিকবার । এদিন পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে এ কথারই পুনরাবৃত্তি করলেন তিনি ।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এদিনের বৈঠকে (Eastern Zonal Council) বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব । উপস্থিত ছিলেন, ওড়িশার দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী প্রদীপ কুমার আমেত ও তুষার কুমার বেহেরা ।
আরও পড়ুন: সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যেরও, বৈঠকে বললেন অমিত শাহ