কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: বিধানসভায় নবনির্মিত মিউজিয়ামের উদ্বোধনে গিয়ে 'বাংলার মাটি বাংলার জল' এই গানকে রাজ্য সংগীত হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র পালনের অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে এই গানকে জাতীয় সংগীতের মতোই মর্যাদা দেওয়ার কথা বলেন তিনি। আর এই বিষয়টি নিয়েই রাত থেকে চলছে রাজনৈতিক তরজা।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি অভিযোগ করেছে, আসলে এর মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ইচ্ছে খুশি মতো ভাবনা বাংলার মানুষের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন। সোমবার বিধানসভায় মিউজিয়ামের উদ্বোধনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "জাতীয় সংগীতের মতো এবার রাজ্য সংগীত গাওয়ার সময়ও উঠে দাঁড়াতে হবে।" তিনি এও জানান, আজ, মঙ্গলবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উঠে দাঁড়িয়ে এই গান গাইবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্য সংগীতের প্রচলন থাকলেও বাংলায় এমন কোনও রাজ্য সংগীত অতীতে ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে আলোচনার সময় রাজ্য সংগীত হিসাবে 'বাংলার মাটি বাংলার জল' রবীন্দ্রনাথের এই গানটিকে বেছে নেওয়া হয়। পরে এই মর্মে রাজ্য বিধানসভায় বিলও পাশ হয়। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গানকে জাতীয় সংগীতের মতো রাজ্যের মানুষের কাছে মর্যাদা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, "এবার থেকে জাতীয় সংগীতের মতোই উঠে দাঁড়িয়ে গাইতে হবে রাজ্য সংগীত অর্থাৎ 'বাংলার মাটি বাংলার জল'। ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও রাজ্য সংগীত গাওয়া হবে।
এদিন এনিয়ে পালটা মুখ খুলেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা তথা দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, "সম্মান দেখানোটা কোনও অসম্মানের বিষয় নয়। কিন্তু মানুষ কোথায় উঠে দাঁড়াবে সেটা তাদের স্বতঃস্ফূর্ত তার প্রশ্ন। এইটা মানুষের উপরই ছেড়ে দেয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা হলে তৃণমূলের অনুষ্ঠানে গানটি গাইতেই পারেন। কিন্তু তাকে জাতীয় সঙ্গীতের সমমর্যাদা দিতে হবে বলে তাহলে এটা পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি পক্ষে একটা বিরূপ ধারণা দেশে তৈরি হবে।
যদিও এই নিয়ে বিতর্কের কিছু দেখছেন না তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র তথা বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ নয় একাধিক রাজ্যের আলাদা রাজ্য সংগীত রয়েছে। রাজ্য সংগীত থাকার অর্থ জাতীয় সংগীতকে অবমাননা বা ছোট করা নয়। রবীন্দ্রনাথের বাংলার মাটি বাংলার জল যদি রাজ্য সংগীত হয় তাহলে বিরোধিতার কী আছে? সেটাই তো বোঝা যাচ্ছে না।"
আরও পড়ুন: