গঙ্গাসাগর, 8 জানুয়ারি: "কুম্ভমেলাকে কেন্দ্রীয় সরকার সবরকমের সাহায্য করে। গঙ্গাসাগর মেলা কুম্ভমেলার থেকেও বড় ৷ তার কারণ কুম্ভমেলায় যাতায়াতের জন্য বাস ও ট্রেন পরিষেবা আছে। আর গঙ্গাসাগরে জল পার হয়ে আসতে হয়। সেইদিক থেকে বিচার করলে গঙ্গাসাগর অন্যতম সেরা মেলা।" সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সাগরদ্বীপে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানেই দাঁড়িয়ে আক্ষেপের কথা বললেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
তিনি আরও বলেন, "গঙ্গাসাগর মেলাকে এখনও পর্যন্ত ভারত সরকার কেন স্বীকৃতি দিল না, তা আমি জানি না। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলাকে একটি পয়সাও দেয় না। সবটাই আমরা করি। সবটাই রাজ্য সরকার করে। সবটাই মানুষ করে। অতএব আমরা গরিব হতে পারি। কিন্তু সব ধর্ম সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলি আমরা।" এদিন গঙ্গাসাগরে নেমেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন এবার গঙ্গাসাগর মেলা 9 থেকে 15 জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। 15-16 তারিখ হবে মকর স্নান।
এই সময় প্রত্যেকের জন্যই 5 লক্ষ টাকা করে বীমা থাকছে রাজ্য সরকারের তরফে ৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন এও জানান, গঙ্গাসাগরে আসা সাধারণ মানুষের জন্য তীর্থ কর মকুব করেছে তাঁর সরকার। গঙ্গাসাগর মেলাকে সামনে রেখে পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে একাধিক কাজকর্ম করেছে এই সরকার। তিনি জানিয়েছেন, এবার গঙ্গাসাগর মেলাকে প্রায় 8 কোটি টাকা খরচ করে আলোকসজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে। মেলায় এসে পুণ্যার্থীদের অসুস্থতার কথা ভেবে 300টি শয্যার হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। গঙ্গাসাগরে তিনটি হেলিপ্যাড স্টেশন তৈরি করা হয়েছে ৷ এবার গঙ্গাসাগর মেলায় আসার জন্য থাকছে প্রায় আড়াই হাজার বাস ও 100টিরও বেশি লঞ্চ।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে কপিলমুনির আশ্রমকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। কলকাতা থেকে এদিনই গঙ্গাসাগরে এসে পৌঁছন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর সঙ্গে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব-সহ একদল আমলা। এদিন প্রথমে হেলিপ্যাডে একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ এরপর সেখান থেকে তিনি সরাসরি চলে যান ভারত সেবাশ্রমে। সেখান থেকে কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কপিলমুনি আশ্রম থেকে বেরনোর পর সাংবাদিকদের সামনাসামনি হন মুখ্যমন্ত্রী ৷ গঙ্গাসাগরকে রাষ্ট্রীয় মেলার তকমা না-দেওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বহুবার আমি কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখেছি। একইসঙ্গে ইউনেসকো'কেও মেলা নিয়ে জানিয়েছি। আমি মনে করি এই মেলায় এক কোটির বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আমাদের যতটুকু ক্ষমতা আমরা এই মেলাতে সাহায্য করি। কপিলমুনির আশ্রম অতি পবিত্র জায়গা।"
আরও পড়ুন: