কলকাতা, 31 মে: দেশের রাজধানীতে কুস্তিগীরদের প্রতিবাদের আঁচ এসে পড়ল কলকাতায় ৷ সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া ও বিনেশ ফোগতদের আন্দোলনের সমর্থনে এবার পা মেলাল তিলোত্তমা। ঘোষণা মতো বুধবার হাজরা থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত কলকাতার ক্রীড়াবিদদের নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তবে পদযাত্রার শুরুতেই মন্ত্রী জানিয়েছিলেন এই মিছিল শেষ হওয়ার পূর্বেই চমক রয়েছে ৷ তখন বিষয়টি বোঝা না গেলেও মিছিল ভবানীপুরে পৌঁছতেই তা পরিষ্কার হয়ে যায় ৷ মিছিলে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
নবান্ন সভাঘরে মাত্র কয়েক মিনিটে বৈঠক শেষ করেই এদিনের মিছিলে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেখানে 'উই ওয়ান্ট জাসটিস'-এর প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁকে হাঁটতে দেখা যায় ৷ এই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷ এদিনের মিছিল রবীন্দ্র সদনে গিয়ে শেষ হয় ৷
এদিনের মিছিলে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিল বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের 36টি সংগঠন, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহমেডান স্পোর্টিং-আইএফএ । ছিলেন রাজ্যের উপক্রীড়ামন্ত্রী এবং বাংলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি, ইশান পোড়েল, সৌরাশিস লাহিড়ী ও শিবশঙ্কর পালের মত ক্রিকেটাররাও । অলিম্পিয়ান জয়দীপ কর্মকারের পাশাপাশি ছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া-সহ বর্তমান এবং প্রাক্তন ফুটবলাররা ৷ ছিলেন মনোজ কোঠারিরাও । তবে আজকের একদিনের মিছিলই শেষ নয়, আগামিকাল গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশ থেকে ফের প্রতিবাদ মিছিল হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
প্রসঙ্গত, একমাসের বেশি সময় ধরে দিল্লিতে দেশের কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগে প্রতিবাদ চালাচ্ছেন দেশের পদকপ্রাপ্ত কুস্তিগীররা ৷ এরই মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে 28 মে নয়া সংসদ ভবন অভিযানে যাওয়ার আগে যন্তর মন্তরে কুস্তিগীরদের আটকে দেয় পুলিশ ৷ সেখানে তাঁদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ এমনকি কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে দিল্লি পুলিশ ৷ এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দশহরার দিন হরিদ্বারে গঙ্গায় বজরং ও সাক্ষীরা তাঁদের অর্জিত সমস্ত মেডেল ভাসিয়ে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ৷ সেই মতো তাঁরা হর কি পুরীর ঘাটে পৌঁছেও যান ৷ এরপর সেখানে কৃষকনেতারা এসে তাঁদের সঙ্গে অনেকক্ষণ আলোচনা করেন ৷ এরপর কুস্তিগীরদের থেকে পদক নিয়ে তাঁদের এলাকা থেকে বের করে নিয়ে যান কৃষকনেতারা ৷ তবে সাক্ষীরা কেন্দ্রীয় সরকারকে 5 দিনের সময় দিয়েছেন ৷ তার মধ্যে কোনও বিহিত না হলে তাঁরা ফের পদক বিসর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৷
সেই আন্দোলনের রেশ ধরেই এবার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছে বাংলার ক্রীড়াজগত । এই বিষয়ে অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, "দেশের পদকজয়ীরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছে । তাঁদের সঙ্গে এই অমানবিক আচরণ প্রমাণ করে দেশে মানবিক সরকারের প্রয়োজন । ইতিমধ্যে মিছিলে যোগদানের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন ক্রীড়াসংস্থা রাজ্য ক্রীড়ামন্ত্রকের এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে ।"
আরও পড়ুন : সাক্ষী-ভিনেশদের বিক্ষোভে উদ্বেগে বিশ্ব সংস্থা! ভারতীয় ফেডারেশনকে বরখাস্তের হুঁশিয়ারি