কলকাতা, 3 জুলাই : এই ছক বড় চেনা । জামাতুল মুজাহিদিনের ধাত্রীগৃহ বাংলাদেশেও একই পদ্ধতিতে কাজ করছে জঙ্গিরা । সেই দেশের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, চট্টগ্রামসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় জঙ্গি প্রশিক্ষণের আখড়া হয়ে উঠেছে মাদ্রাসাগুলি । সেই একই ছক কাজ করছে এই দেশেও । সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাসংস্থা এই রাজ্যে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি মাদ্রাসায় চলছে জঙ্গি প্রশিক্ষণ। আজ সংসদে দাঁড়িয়ে এই গোয়েন্দা রিপোর্টের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তে উঠে এসেছিল তথ্য । গোয়েন্দারা জানতে পারেন, মকিমনগর মাদ্রাসা ও শিমুলিয়া মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ, এমনকী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের তালিমও দেওয়া হত। সম্প্রতি NIA-র হাতে ধৃত জঙ্গি তথা বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ হাবিবুর রহমান মকিমনগর মাদ্রাসাতেই ট্রেনিং নিয়েছিল । গোয়েন্দা সূত্রে খবর , এখানেই সে প্রথমবার বোমারু মিজান ওরফে কওসরের সংস্পর্শে আসে। এই দুই মাদ্রাসায় পুরুষদের সঙ্গে নারীদেরও ছিল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা । পরে উঠে আসে তৃতীয় আরেকটি মাদ্রাসার নাম । ডোমকলের ঘোড়ামারা মাদ্রাসা । এই মাদ্রাসাটিকে জঙ্গিরা চিন্তিত করেছিল সেই সময়ে । পুরোদস্তুর প্রশিক্ষণ শুরুর আগেই ঘটে যায় খাগড়াগড় বিস্ফোরণ। সামনে আসে মাদ্রাসায় প্রশিক্ষণের ঘটনা ।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ভৌগোলিক অবস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে হত বাছা হচ্ছে মাদ্রাসা । জঙ্গিরা এমন মাদ্রাসা বেছে নিচ্ছে যাতে সংশ্লিষ্ট জেলাতো বটেই, পার্শ্ববর্তী জেলার কার্যকলাপ সেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় । তারপর সেখানে দাওয়াতের মাধ্যমে প্রথমে চলছে মগজধোলাই । তারপর দেওয়া হচ্ছে জেহাদি শিক্ষার পাঠ । শেষে শেখানো হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও IED তৈরির পাঠ ।
আজ সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি বলেন, "বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে জঙ্গিরা এখনও সক্রিয়। তারা নতুন সদস্য নিয়োগ করছে । ওইসব গোয়েন্দা রিপোর্ট রাজ্যকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে । নিতে বলা হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ।" গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন , শুধু প্রশিক্ষণ নয়, জঙ্গিদের শেল্টার দিতেও ব্যবহার করা হচ্ছে মাদ্রাসা । আজ স্পেশাল টাস্কফোর্সে হাতে ধৃত জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া জঙ্গি আব্দুর রহিম জঙ্গিদের সেল্টারের ব্যবস্থা করত । এই কাজে ধুলিয়ান বা সুতি এলাকার কোনও মাদ্রাসাকে ব্যবহার করা হতো কিনা তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা ।