কলকাতা, 17 মে: কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার 'মা'। সেই ফ্লাইওভারও ক্রমশ খানাখন্দে ভরে উঠছে ৷ কিন্তু মেরামতি করা যাচ্ছে না ৷ সব দেখে শুনেও হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে কেএমডিএ-কে ৷ যার জন্য অবশ্য কলকাতা পুলিশকেই দায়ী করছে তারা ৷ অভিযোগ, পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমস্যার জেরেই মেরামতির কাজ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট সংস্থা ৷
দীর্ঘ দিন ধরেই খারাপ হয়ে গিয়েছে এজেসি বোস রোড এবং মা ফ্লাইওভারের সংযোগ স্থল। এই ফ্লাইওভারে স্বাস্থ্যের দেখভাল করে থাকে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। সংস্থার দাবি, ফ্লাই ওভারের একাধিক জায়গা খানা খন্দে ভরে গিয়েছে ৷ কেএমডিএ সূত্রে খবর, এই রকম গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভারের মেরামত করতে টানা সময় দরকার ৷ সা কারণে যান চলাচলও বন্ধ রাখতে হবে। তবে তার জন্য পুলিশের অনুমতি মিলছে না। রাতের কয়েক ঘণ্টার জন্য অনুমতি পুলিশের তরফে দেওয়া হলেও, যে কাজ করা দরকার সেই সময়ের মধ্যে তা প্রায় অসম্ভব। আর এই টানাপোড়েনের জেরে কার্যত অথৈ জলে ফ্লাই ওভারের মেরামতির কাজ ৷
কেএমডিএ সূত্রে খবর, ফ্লাইওভারের প্রায় অধিকাংশ জায়গায় উঠে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। এই ফ্লাইওভার এমনই দুর্ঘটনাপ্রবণ। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে পিচ আস্তরণ উঠে যেভাবে খন্দে ভরছে ফ্লাইওভারের একাংশ তাতে আরও দুর্ঘটনা প্রবণ হয়ে উঠছে বলে সংশয় প্রকাশ করছে কেএমডিএ কর্তারা। এই সমস্ত জায়গায় গাড়ি রীতিমতো ঝাঁকুনি দিয়ে চলছে। কেএমডিএ-র দাবি, ফ্লাইওভারে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ পার্ক সার্কাসের দিক। ফলে দ্রুত পাকাপাকি মেরামতির প্রয়োজন। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও মেরামত করা যাচ্ছে না ফ্লাইওভার ৷
একদিকে যেমন পুলিশের অনুমতি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে আর্থিক দিক থেকেও একটা সমস্যা রয়েছে বলে দাবি কেএমডিএ কর্তাদের ৷ সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, ম্যাস্টিক করলে রাস্তা ভালো থাকলেও, সেই কাজ করতে হবে আগুন জ্বালিয়ে ৷ ফলে পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবং খরচ বেশি হওয়ার জেরে তেমনভাবে কিছুই করা যাচ্ছে না। তাই বিটুমিন কংক্রিট করার মধ্যে দিয়ে মেরামত করার কাজ চলছে। মা ফ্লাইওভারের এই রাস্তা প্রায় হাজার মিটার লম্বা। পুলিশ সূত্রে খবর, মা ফ্লাইওভার উভয়মুখি রাস্তায় দিনের বেলা দেড় থেকে দুই লক্ষ যান চলাচল করে। ফলে টানা বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। তাই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে যতটা সম্ভব কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে কেএমডিএকে।
অন্যদিকে, কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, বারবার পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে সংস্থার তরফে। কিন্তু দীর্ঘ সময় রাস্তা বন্ধ রাখার অনুমতি মিলছে না। তাই যে কয়েক ঘণ্টা পাওয়া যাচ্ছে তাতেই জোড়া-তাপ্পি মেরে কাজ চলছে। কেএমডিএ-র দাবি, রাস্তার অবস্থা দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে ৷ আশঙ্কার কারণ, সামনেই বর্ষা ৷ তার প্রভাবে আরও খারাপ হবে এর অবস্থা। শুধু তাই নয়, রাবার সিল লাগাতে হবে ফ্লাইওভারের সংযোগ এলাকা গুলিতেও। সেই কাজ করতেও বেশ সময় লাগবে বলেও জানাচ্ছেন কেএমডিএ আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: সারপ্রাইজ ভিজিটে ভূমি রাজস্ব ও অর্থ দফতরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা