কলকাতা, 16 ফেব্রুয়ারি: রাজাবাজার ঘিঞ্জি বস্তি এলাকায় শিশুদের কাছে পৌঁছে যাবে চলন্ত পাঠাগার। তাতে সিলেবাসের বই ছাড়া থাকবে হরেক রকম কবিতা, গল্পের বইয়ের সম্ভার। শুধু বই পড়ার সঙ্গেই বাড়তি পাওনা হিসেবে শিশুরা শুনতে পারবে দিদিদের মুখে গল্প। আপাতত সপ্তাহে তিন দিন মিলবে এই পাঠাগারের সুবিধা। মঙ্গল ও বৃহস্পতি এবং শনিবার বিকেলে আসবে এই গাড়ি। তিন চাকার ভ্যানে প্লাইয়ের তাক করে সাজানো বইপত্র। বস্তিবাসী শিশুদের বইয়ের প্রতি আকর্ষণ বাড়ানোর লক্ষ্যেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এমন প্রয়াস (Library at Door with Books for Children)।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার সাহিনা জাবেদ জানান, কলকাতার প্রথম মোবাইল লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা কালিদাসবাবুর চিন্তা-ভাবনা থেকেই। প্রত্যক্ষভাবে কালিদাসবাবুর সাহায্য পেয়েছেন তিনি। স্কুলের পড়ানো হয় তেমন বই নেই। পুঁথিগত বিদ্যা ছাড়াও সাধারণ জ্ঞান, মজার গল্প, ভূতের গল্পের বই থাকছে। থাকছে রবীন্দ্রনাথের 'জুতো আবিষ্কার' থেকে শুরু করে বাংলার আরও নানা বইয়ের সম্ভার। এছাড়াও রয়েছে হিন্দি ইংরেজি ভাষার নানা ধরনের বই। এই মোবাইল লাইব্রেরিতে আপাতত কমবেশি 500টি বই থাকছে। আগামিদিনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
এই গাড়ি এলাকার কচিকাঁচাদের কাছে যেন আনন্দের গাড়ি। গাড়ি এলেই ভিড় জমছে তাদের। বই পড়া থেকে গল্প শোনা চলছে জমিয়ে। আছে বই বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ। রেজিস্ট্রারে নাম, ফোন নম্বর লিখে বই নিয়ে যাওয়ারও সুযোগ থাকছে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থেকে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আগামিদিনে গল্প বলার আসর তৈরি করবেন। উল্লেখ্য, পুরো বিশ্বের মতো এরাজ্যে এই শহরের বুকে নেমে এসেছিল অতিমারি করোনা।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছতা আনতে ডিজিটাল লাইব্রেরি করল কলকাতা পৌরনিগম
বন্ধ হয়েছিল স্বাভাবিক জীবনের চাকা। থমকে ছিল অফিস, আদালত থেকে স্কুল। তবে ধীরে ধীরে সব শুরু হলেও সব থেকে পরে শুরু হয়েছিল স্কুল। ফলে দীর্ঘদিন স্কুল না-করায় পঠনপাঠন থেকে মন সরে গিয়েছিল খুদে পড়ুয়াদের। হরিজন বস্তি , খাল-পাড়, কসাই বস্তি, যোগি পাড়া ও হরিনাথ দে রোড-সহ রাজাবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে এই লাইব্রেরি। উদ্দেশ্য ছোটদের মধ্যে ফের পড়ার অভ্যাস ফেরানো। মজার ছলে আরও বেশি জ্ঞান অর্জন করার পথ প্রশস্ত করা।