কলকাতা, 13 ফেব্রুয়ারি: কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী বাজেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি করবে ১৭ টি বামপন্থী ও সহযোগী দল ৷ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা এবং দুরবস্থার বিষয়গুলি তুলে ধরতে রাজ্য বামফ্রন্টের এক বৈঠকে যৌথভাবে প্রচার সংগঠিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে ৷ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এক লিখিত বিবৃতিতে একথা জানিয়েছেন ৷
সদ্যই শেষ হয়েছে ১৭ টি বামপন্থী ও সহযোগী দলের সভা ৷ যেখানে এ রাজ্যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । বৃহস্পতিবার এক লিখিত বিবৃতিতে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, "কেন্দ্রীয় সরকার মূল অর্থনৈতিক সমস্যাকে আড়াল করে ধর্মীয় ভাবাবেগকে দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রশাসন চালাচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে গৃহীত বাজেটের ফলে দেশের ব্যাপক সংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকা ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে উঠছে । সরকার ধনীদের নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে চলেছে ৷ ফলে সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা বাড়ছে ।" স্বাধীনতার পর সাধারণ মানুষকে কখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি বলে লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান ।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ, LIC-র মতো সংস্থার সরকারি মালিকানা প্রত্যাহার করার দিকে এগিয়ে চলেছে । কল কারখানা বন্ধ, চালু কারখানায় কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে বেকারত্ব বেড়ে চলেছে । স্বাধীনতার পর ৪৫ বছরের মধ্যে সবথেকে বেশি কর্মহীন মানুষ ভারতে রয়েছে । সারাদেশে নূন্যতম মজুরি একুশ হাজার টাকা এবং উপযুক্ত পরিমাণে বেকার ভাতা প্রদান করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে । পাশাপাশি কৃষকদের এককালীন ঋণ মুকুবের ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান । তিনি আরও জানান, খাদ্য, মৎস সহ কৃষি, সামাজিক কল্যাণ, নগর উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারি ভর্তুকি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে ৷ ফলে কোটি কোটি দেশবাসীকে দারিদ্রতার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে । এইসব ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি না করতে পারলে অন্তত আগের অবস্থা বজায় রাখার কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি ৷
চলতি মাসের ২৬ তারিখে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির আহ্বানে বিমা ও ব্যাঙ্ক শ্রমিক সংগঠন এবং বিমা এজেন্ট সংগঠনগুলি ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউজ়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং হিন্দুস্তান বিল্ডিংয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে । 22টি জেলায় জনবিরোধী বাজেটের বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রচার চালানো হবে । এই বাজেটের ফলে কীভাবে মানুষের ক্ষতি হবে, কোটি কোটি LIC গ্রাহকরা কতটা সমস্যায় পড়বেন তা বোঝানো হবে ।