ETV Bharat / state

Father's Day 2023: বাবাই দিয়েছেন 'দ্বিতীয় জীবন', তাঁর সম্মানে পিতৃদিবসে সিলিকনের মূর্তি গড়ালেন ছেলে

author img

By

Published : Jun 18, 2023, 10:39 PM IST

বাবার স্মৃতিতে আস্ত একটা সিলিকন মূর্তি তৈরি করিয়েছেন আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ 3 বছর আগে তাঁর বাবা অরুণ কুমার দত্ত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৷ কিন্তু, বাবাকে চোখে হারাতেন সুমিতবাবু ৷ কারণ বাবা তাঁকে শুধু জন্ম দেননি ৷ বাবার দৌলতেই আজ আর পাঁচজনের মতো হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন তিনি ৷ আদালতে গিয়ে সওয়াল-জবাব করতে পারছেন ৷

Father's Day 2023 ETV BHARAT
Father's Day 2023
বাবার সম্মানে সম্মানে পিতৃদিবসে সিলিকনের মূর্তি গড়ালেন ছেলে

কলকাতা, 18 জুন: 'বাবা'- শব্দের পরিভাষা এক এক জনের কাছে এক একরকম ৷ বাবা শব্দটা শুনলেই মনে পড়ে দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা ৷ বাড়ির সব দায়িত্ব-কর্তব্য নিজের কাঁধে তুলে হাসিমুখে পরিবারকে আনন্দ দিয়ে যাওয়ার নামই যে 'বাবা' ৷ এমনই একজন পিতা ছিলেন অরুণ কুমার দত্ত ৷ যিনি আজ প্রয়াত ৷ অরুণ কুমার দত্তর ছেলে সুমিত দত্ত একজন আইনজীবী ৷ বর্তমানে তিনি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন তাঁর বাবার চেষ্টাতেই ৷ সুমিত দত্ত মনে করেন, তাঁর বাবাই দ্বিতীয়বার তাঁকে জীবন দিয়েছেন ৷ তাই বাবার স্মৃতিতে শিল্পী সুবিমল দাসকে দিয়ে তৈরি করিয়েছেন একটি সিলিকনের মূর্তি ৷

অরুণ কুমার দত্ত বেঁচে নেই ৷ তবে বাবার স্মৃতিতে ছেলে সুমিত দত্ত বাবার সিলিকনের মূর্তি তৈরি করালেন ৷ এর পিছনে রয়েছে একটি কাহিনী ৷ 2012 সালে একটি মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ বাড়িতে বিছানা ও হুইল চেয়ারে তাঁর জীবন সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ চিকিৎসকরাও হার মেনে নিয়েছিলেন ৷ অরুণ কুমার দত্তকে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আর কোনও দিন সুমিতবাবু চলাফেরা করতে পারবেন না ৷ চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলেও, চেষ্টা ছাড়েননি অরুণ কুমার দত্ত ৷ ছেলে সুমিতকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন তিনি ৷

ক্ষিদ্দা বলেছিলেন, ‘ফাইট কোনি ফাইট’ ৷ অরুণবাবুও তাঁর ছেলেকে সেই মন্ত্রই দিয়েছিলেন, ‘ফাইট সুমিত ফাইট’ ৷ তিনিই ছেলেকে আবার মামলা লড়ার জন্য বাধ্য করেছিলেন ৷ অরুণ কুমার দত্ত নিজে গাড়িতে করে ছেলেকে আদালত ও চেম্বারে নিয়ে যেতেন ৷ বাবার ইচ্ছেতেই মামলা লড়া শুরু করেন তিনি ৷ এরপর চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফের নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ান আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ বর্তমানে তাঁর কোনও ওষুধ লাগে না ৷ একটা সময় লাঠি হাতে চলাফেরা করতেন ৷ এখন সেটাও লাগে না ৷

আরও পড়ুন: আজ পিতৃ দিবস ! কেন এই দিনটি শুরু হয়েছিল ? জেনে নিন বিস্তারিত

কিন্তু, সবচেয়ে কঠিন সময়ে যিনি মজবুত 'লাঠি' হয়ে উঠেছিলেন সুমিত দত্তর, সেই অরুণ কুমার দত্ত বর্তমানে বেঁচে নেই ৷ 77 বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি ৷ প্রায় একসপ্তাহ কোমায় থাকার পর 2022 সালের 27 জুলাই মারা যান অরুণবাবু ৷ কিন্তু তাঁকে চোখে হারাতে থাকেন সুমিত দত্ত ৷ কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না ৷ তাই শিল্পী সুবিমল দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি ৷ সুবিমল দাস একজন বিখ্যাত ভাস্কর শিল্পী ৷

সুমিতবাবুর বলেন, "আমার বাবা কখনও মরতে পারেন না ৷ তাই বাবার মৃত্যুর পর তাঁর লেখা ডায়েরি থেকে চারটি বই আমি প্রকাশ করলাম ৷ একটি মূর্তিও আমি গড়িয়েছি ৷ আজও যখন আমি বাইরে কেস লড়তে যাই ৷ আমার মনে পড়ে যায় আমার বাবার লড়াই এর কথা ৷" এখন যখনই কোনও মামলা জেতেন, তার আনন্দ সুমিত দত্তকে বাবার কথা মনে করিয়ে দেয় ৷

আরও পড়ুন: রণবীর থেকে শাহিদ, বলিউডের এই 5 সেলেব চুটিয়ে উপভোগ করছেন পিতৃত্ব

অরুণ কুমার দত্তর এই সিলিকনের মূর্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছেন শিল্পী সুবিমল দাস ৷ শিল্পী জীবনে অনেক সিলিকনের মূর্তি তৈরি করেছেন তিনি ৷ তবে, একজন বাবার প্রতি ছেলের এই ভালোবাসা তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ৷ তাই নিজের সেরাটা দিয়ে অরুণ কুমার দত্তের সিলিকনের মূর্তি তৈরি করেছেন সুবিমল দাস ৷ তিনি বলেন, "আমরা এরকম অনেক কাজ করেছি ৷ কিন্তু, সুমিত বাবু নিজের শারীরিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন ৷ মূর্তি তৈরি করার এক একটা ভঙ্গিমা নিয়ে উনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন ৷ যা সত্যিই আগে কখনও কারও ক্ষেত্রে দেখিনি ৷"

বাবার সম্মানে সম্মানে পিতৃদিবসে সিলিকনের মূর্তি গড়ালেন ছেলে

কলকাতা, 18 জুন: 'বাবা'- শব্দের পরিভাষা এক এক জনের কাছে এক একরকম ৷ বাবা শব্দটা শুনলেই মনে পড়ে দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা ৷ বাড়ির সব দায়িত্ব-কর্তব্য নিজের কাঁধে তুলে হাসিমুখে পরিবারকে আনন্দ দিয়ে যাওয়ার নামই যে 'বাবা' ৷ এমনই একজন পিতা ছিলেন অরুণ কুমার দত্ত ৷ যিনি আজ প্রয়াত ৷ অরুণ কুমার দত্তর ছেলে সুমিত দত্ত একজন আইনজীবী ৷ বর্তমানে তিনি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন তাঁর বাবার চেষ্টাতেই ৷ সুমিত দত্ত মনে করেন, তাঁর বাবাই দ্বিতীয়বার তাঁকে জীবন দিয়েছেন ৷ তাই বাবার স্মৃতিতে শিল্পী সুবিমল দাসকে দিয়ে তৈরি করিয়েছেন একটি সিলিকনের মূর্তি ৷

অরুণ কুমার দত্ত বেঁচে নেই ৷ তবে বাবার স্মৃতিতে ছেলে সুমিত দত্ত বাবার সিলিকনের মূর্তি তৈরি করালেন ৷ এর পিছনে রয়েছে একটি কাহিনী ৷ 2012 সালে একটি মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ বাড়িতে বিছানা ও হুইল চেয়ারে তাঁর জীবন সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ চিকিৎসকরাও হার মেনে নিয়েছিলেন ৷ অরুণ কুমার দত্তকে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আর কোনও দিন সুমিতবাবু চলাফেরা করতে পারবেন না ৷ চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলেও, চেষ্টা ছাড়েননি অরুণ কুমার দত্ত ৷ ছেলে সুমিতকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন তিনি ৷

ক্ষিদ্দা বলেছিলেন, ‘ফাইট কোনি ফাইট’ ৷ অরুণবাবুও তাঁর ছেলেকে সেই মন্ত্রই দিয়েছিলেন, ‘ফাইট সুমিত ফাইট’ ৷ তিনিই ছেলেকে আবার মামলা লড়ার জন্য বাধ্য করেছিলেন ৷ অরুণ কুমার দত্ত নিজে গাড়িতে করে ছেলেকে আদালত ও চেম্বারে নিয়ে যেতেন ৷ বাবার ইচ্ছেতেই মামলা লড়া শুরু করেন তিনি ৷ এরপর চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফের নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ান আইনজীবী সুমিত দত্ত ৷ বর্তমানে তাঁর কোনও ওষুধ লাগে না ৷ একটা সময় লাঠি হাতে চলাফেরা করতেন ৷ এখন সেটাও লাগে না ৷

আরও পড়ুন: আজ পিতৃ দিবস ! কেন এই দিনটি শুরু হয়েছিল ? জেনে নিন বিস্তারিত

কিন্তু, সবচেয়ে কঠিন সময়ে যিনি মজবুত 'লাঠি' হয়ে উঠেছিলেন সুমিত দত্তর, সেই অরুণ কুমার দত্ত বর্তমানে বেঁচে নেই ৷ 77 বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি ৷ প্রায় একসপ্তাহ কোমায় থাকার পর 2022 সালের 27 জুলাই মারা যান অরুণবাবু ৷ কিন্তু তাঁকে চোখে হারাতে থাকেন সুমিত দত্ত ৷ কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না ৷ তাই শিল্পী সুবিমল দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি ৷ সুবিমল দাস একজন বিখ্যাত ভাস্কর শিল্পী ৷

সুমিতবাবুর বলেন, "আমার বাবা কখনও মরতে পারেন না ৷ তাই বাবার মৃত্যুর পর তাঁর লেখা ডায়েরি থেকে চারটি বই আমি প্রকাশ করলাম ৷ একটি মূর্তিও আমি গড়িয়েছি ৷ আজও যখন আমি বাইরে কেস লড়তে যাই ৷ আমার মনে পড়ে যায় আমার বাবার লড়াই এর কথা ৷" এখন যখনই কোনও মামলা জেতেন, তার আনন্দ সুমিত দত্তকে বাবার কথা মনে করিয়ে দেয় ৷

আরও পড়ুন: রণবীর থেকে শাহিদ, বলিউডের এই 5 সেলেব চুটিয়ে উপভোগ করছেন পিতৃত্ব

অরুণ কুমার দত্তর এই সিলিকনের মূর্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছেন শিল্পী সুবিমল দাস ৷ শিল্পী জীবনে অনেক সিলিকনের মূর্তি তৈরি করেছেন তিনি ৷ তবে, একজন বাবার প্রতি ছেলের এই ভালোবাসা তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ৷ তাই নিজের সেরাটা দিয়ে অরুণ কুমার দত্তের সিলিকনের মূর্তি তৈরি করেছেন সুবিমল দাস ৷ তিনি বলেন, "আমরা এরকম অনেক কাজ করেছি ৷ কিন্তু, সুমিত বাবু নিজের শারীরিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন ৷ মূর্তি তৈরি করার এক একটা ভঙ্গিমা নিয়ে উনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন ৷ যা সত্যিই আগে কখনও কারও ক্ষেত্রে দেখিনি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.