কলকাতা, 11 এপ্রিল: "রাজভবনের জনসংযোগের চেষ্টা রাজ্য়ের নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে যদি ব্যবহৃত হয়, একমাত্র তাহলেই আপত্তি করবে তৃণমূল কংগ্রেস ৷" মঙ্গলবার এই ভাষাতেই রাজভবনে আয়োজিত হতে চলা বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিলেন শাসকদলের প্রতিনিধি ৷ একইসঙ্গে রাজভবনকে 'জন রাজভবন'-এ রূপান্তরিত করা নিয়ে কটাক্ষের সুরও শোনা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের গলায় ৷ তাঁর প্রশ্ন, "আগে কি রাজভবন বন রাজভবন ছিল ?"
আসন্ন বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজভবনের তরফে 'হেরিটেজ ওয়াক' নামে একটি কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে ৷ এই কর্মসূচির আওতায় রাজভবনকে 'জন রাজভবন'-এ রূপান্তরিত করা করা হবে ৷ বছরের প্রথম দিন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বাসভবনকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে ৷ রাজভবনে থাকা কিছু দুর্লভ ও ঐতিহাসিক জিনিস সাধারণ মানুষ ওই দিন দেখতে পাবেন ৷ এদিন এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "রাজভবনে অনুষ্ঠান কোনও নতুন বিষয় নয় ৷ অতীতেও বহু রাজ্যপালের সময় নানা অনুষ্ঠান হয়েছে ৷ সাধারণ মানুষও তার সাক্ষী থেকেছেন ৷ আগে কি ওটা বন রাজভবন ছিল ! ওটা জন রাজভবনই ছিল ৷ আসলে এখানে নিরাপত্তার বিষয় জড়িয়ে রয়েছে ৷" অর্থাৎ নিরাপত্তার কারণেই রাজভবনে সাধারণের প্রবেশের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে স্পষ্ট করে দেন কুণাল ৷
এদিন কুণাল ঘোষ আরও বলেন, রাজভবনের তরফ থেকে নেওয়া কোনও জনসংযোগ কর্মসূচিতেই আপত্তি নেই বাংলার শাসকদলের ৷ তবে, যদি তা রাজ্য়ের নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, তখন দলের তরফে আপত্তি তোলা হবে ৷ মোটের উপর বাংলা নববর্ষের দিন রাজভবনে রাজ্যপাল যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ ৷ তিনি বলেন, "অতীতে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অন্যান্য রাজ্যপালও সৌজন্য দেখাতে রাজভবনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন ৷ এটি ভালো উদ্যোগ ৷ এতে আপত্তি করার কী আছে !"
আরও পড়ুন: উপাচার্যদের কাছে সাপ্তাহিক রিপোর্ট তলব আচার্যের, কী বলছে শিক্ষামহল ?
এরপর সাংবাদিকদের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, ওই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজভবন কি সমান্তরাল জনসংযোগ করার চেষ্টা করছে ? জবাবে কুণাল বলেন, "রাজ্যপালের যদি মনে হয়, তিনি জনসংযোগ করতেই পারেন ৷ যদি মনে হয় এই জনসংযোগের ওঁর প্রয়োজন রয়েছে, তাতেও আমাদের বলার কিছু নেই ৷ যতক্ষণ সেটা সাংবিধানিক রীতিনীতি ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে, ততক্ষণ তো সেখানে কিছু বলার থাকেও না ৷ কিন্তু, সেই জনসংযোগের চেষ্টা যদি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করা হয়, তখন আমরা আপত্তি করব ৷"