কলকাতা, 23 জানুয়ারি: যাদবপুর সুকান্ত সেতু দিয়ে সন্তোষপুরের দিকে যাওয়ার পথে চোখ টানবে একটি স্কুল বাড়ি (Kolkata School decorated with wall painting)। ভবনটির বাইরে থেকে ভিতরে ক্লাস রুমের দেওয়াল মুড়ে ফেলা হয়েছে রকমারি চিত্রে (School Wall Painting)। আর সেই নান্দনিকতায় আপনার চোখ আটকাতে বাধ্য । এই সুন্দর দেওয়াল চিত্র ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠের (Roof Garden)।
শুরুটা পেশাদার শিল্পী দিয়ে হলেও পরে সেই কাজে হাত লাগিয়েছে এই স্কুলেরই ছাত্রীরা । তাদের তুলির টানে আরও আকর্ষণীয় হয়েছে তাদের প্রিয় দ্বিতীয় বাড়ি । শুধু তাই নয় এই স্কুলের ছাদে শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মী ও ছাত্রীদের হাতে গড়ে উঠেছে আরও একটি সুন্দর ছাদ বাগান । সেখানে সব ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে । সম্পূর্ণ সবজি চলে যায় মিড ডে মিলের রান্নায় । চপের মুখে নয়, মেয়েরা ভালোবেসে পড়াশোনা করুক, আর ভালো কিছু পাক খাওয়ার পাতে । এই চিন্তাভাবনা থেকেই এগুলো করা, বলছেন শিক্ষিকারা ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী সেন বলছেন, "লকডাউনের সময় আমদের স্কুলে আসতে হত কিছু কাজের জন্য । তখন আমদের মাথায় এই চিন্তা ভাবনা আসে । ভাবি, করোনা কালে দীর্ঘদিনের গৃহবন্দী অবস্থা কাটিয়ে মেয়েগুলো স্কুলে আসবে । তারা যাতে স্কুল বিমুখ না হয়, তাই এমন পরিবেশ তৈরি করা যাক যাতে তারা ভালোবেসে পড়াশোনা করে । তাই দেওয়াল চিত্র দিয়ে বাইরের কিছু দেওয়াল সাজাতে শুরু করি । পরে বন্ধ রাখি । 2022 সালে স্কুল স্বাভাবিক হওয়ার পর ছাত্রীরাও সেই দেওয়াল চিত্রে তুলির টান দেয় । সিঁড়ি বা দেওয়ালের বিভিন্ন অংশে বিশিষ্ট মানুষের বাণী লেখা হয় । স্কুলের ভেতরে কোনও দেওয়াল বাকি নেই । ক্লাসের বাইরে, ক্লাসের ভেতরে । এমনকী সিঁড়িতেও শিক্ষামূলক বাণী । বইয়ের পাতায় বাস্তবের শিক্ষা আর দেওয়াল চিত্রে কল্পনার শিক্ষা । স্কুলের দেওয়ালে পরীর পাখায় ভর করে কল্পনার জগতে চলে যায় ছাত্রীরা ।"
আরও পড়ুন: প্রশংসিত নীল-সাদা স্কুল ড্রেসের উদ্যোগ, স্কচ গোল্ড অ্যাওয়ার্ড জিতল বাংলাশ্রী
শুধু দেওয়াল চিত্র নয়, স্কুলের শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মী, ছাত্রীরা আরও এক কর্মকাণ্ড করেছে এই স্কুলের উপরেই । তৈরি করেছে ছাদ বাগান । কাঁচা লঙ্কা থেকে বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, বিট, মুলো এমনকী সরষে চাষও হচ্ছে স্বল্পপরিসরের ছাদ বাগানে । মাশরুমের চাষও করেন ছাত্রী ও শিক্ষিকারা । আর যেই সবজি হয় তা দিয়ে সপ্তাহে এক বা দুদিন অথবা গোটাটাই ব্যবহৃত হয় মি ডে মিলের রান্নায় ।
অপর এক শিক্ষিকা বলেন, "আমরা এখন বাজারে যা কিনি যা খাই অধিকাংশেই সার থাকে । তাই ছোট ছোট মেয়েগুলোর পাতে যদি দুদিন একটু তরতাজা সবজি তুলে দিতে পারি তাতে খারাপ কী !" এভাবেই শিক্ষিকা উজ্জয়িনী চক্রবর্তী, দিপালী মণ্ডল,শিবানী ঘোষ বিশ্বাসদের সঙ্গে ছাত্রী রিমঝিম বিশ্বাস, ত্রয়ী হালদার, শিপ্রা ঠিকাদাররা এই কাজ করে চলেছে ।