কলকাতা, 27 জুলাই: এ বার থেকে বারুইপুর জেলা পুলিশের অন্তর্গত ভাঙড় ও কাশীপুর থানা এলাকায় উর্দিতে না, বরং সাধারণ পোশাকে চলবে কড়া নজরদারি । কাজ করবে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল নেটওয়ার্ক । পুলিশ সূত্রের খবর, এ বার বারুইপুর জেলা পুলিশের অধীনস্থ ভাঙড় ও কাশীপুর-সহ একাধিক উত্তপ্ত এলাকা কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দাদের নজরবন্দি হতে চলেছে । কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দাদের পাশাপাশি ওই উত্তপ্ত এলাকায় নজরদারি চালাবেন স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারাও ।
লালবাজার সূত্রের খবর, এ বার থেকে ভাঙড় ও কাশীপুর-সহ বিভিন্ন থানায় রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি আপাতত অতিরিক্ত নজরদারি থাকবে লালবাজারের । তবে সেটি খাতায়-কলমে নয় ।
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক গোয়েন্দা কর্তা নিজের নাম প্রকাশ করতে না চেয়ে বলেন, "কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দাদের অ্যারেস্টিং পাওয়ার যথেষ্ট । অর্থাৎ তাঁরা চাইলে রাজ্যের বা রাজ্যের বাইরে থেকেও যে কোনও অভিযুক্তকে সন্দেহের বশে গ্রেফতার করতে পারে । ভাঙড় থানা যতদিন না কলকাতা পুলিশের অধীনস্থ হচ্ছে, ততদিন থানার বাইরে থেকে ওই এলাকায় নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ।"
ডিজি-সিপিকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর: গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিপি মনোজ মালভিয়াকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে বারুইপুর জেলা পুলিশের আওতাধীন ভাঙড় থানাকে অবিলম্বে কলকাতা পুলিশের আওতাধীন করা হয় । তার 24 ঘণ্টার মধ্যেই আজ দুপুরে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইডি) আরিশ বিলাল-সহ কলকাতা পুলিশের একাধিক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার এবং কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ও গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে কাশীপুর ও ভাঙড় থানা-সহ মোট সাতটি থানা ইন্সপেকশন করেন ।
আরও পড়ুন: ভাঙড় এবার কলকাতা পুলিশের অধীনে, ডিজিকে পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
ইন্সপেকশনে কলকাতা পুলিশ: সেখানকার রাজ্য পুলিশের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ওই এলাকার অপরাধের ধরন বা নেচার অফ ক্রাইমের প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেন । এছাড়াও ওই সকল এলাকার পুলিশের রেকর্ডে থাকা মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল থেকে শুরু করে ছোটখাটো অভিযুক্ত ও অপরাধীদের একটি নামের তালিকাও সংগ্রহ করেছে কলকাতা পুলিশের এই বিশেষ টিম ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ: পাওয়ার গ্রিডকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই খবরের শিরোনামে এসেছে জমি রক্ষা কমিটি এবং ভাঙড় এলাকা । যখন পুলিশকে ভাঙড়ের বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি এবং সেখানে অবাধ সন্ত্রাস চলেছে, সেই সময়ে একাধিক জঙ্গি সংগঠনের মদত থাকলেও থাকতে পারে বলে আশংকা করেছিল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ । অর্থাৎ ভাঙড়ে যাতে নতুন করে কোনও অশান্তি না ছাড়ায় এবং বাইরে থেকে ইন্ধন জুগিয়ে যাতে এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে, তার জন্যই এই বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে ।